শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১

বীথি চট্টোপাধ্যায়

 

কবিতার কালিমাটি ১১২


জমি   

 

জীবনভর কিছু উস্কানি

তাতেই জ্বলে ওঠে তোমার দেশ,

যেখানে বাস করো তারা তোমায়

দেখিয়ে দিতে পারে শেষের শেষ।

 

শেষের শেষ থেকে আরম্ভ

নিজের হাতে নেই নিজের প্রাণ...

একটা কড়া গলা বলে দেবে

কোনটা হিন্দু? কে মুসলমান!  

 

কে লড়ে? কারা এত বোমা বানায়

ওদের-আমাদের কত ফারাক!

নদীর জল থেকে রুখা জমি

গাছের পাতা থেকে পাখির ডাক...

 

গাছের পাতা ঝরে পড়ে পথে

মাথায় মোট নিয়ে একটি লোক,

বয়েসে নুয়ে পড়ে তার ছায়া

তাতে কী তোর? ভাগ ভেতরে ঢোক!

 

ভেতরে বসে কিছু লেখ না হয়;

সহসা ঝড় তার কী গতিবেগ

একটি রুটি মানে একটি প্রাণ

একটি বিদ্যুৎ; অল্প মেঘ।

 

ভালো-ভাষা

 

অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলেছি, কত কী ভুলতে পারি,

তবু ঢাকা থেকে ফোন-আসে; আজকে একুশে ফেব্রুয়রি

 

আবোলতাবোলে জমে আছে বহু অনাদরভরা ধুলো

ঝরে পড়ে থাকে প্রচার না-পাওয়া কাব্যগ্রন্থগুলো।

 

কলেজস্ট্রীটের ভিড়-কোলাহলে, প্রেসিডেন্সির গেটে

বাংলা-বইয়ের পাতা উল্টোয়; ফুটপাত হেঁটে হেঁটে।

 

অনেক কিছুই ভুলে যেতে পারি শহরের পথে নেমে

হে কারুবাসনা, জীবন মরণ নিঃশেষ প্রেমে প্রেমে।

 

ভাষা শহীদের নাম ক-জনের সত্যিই মনে থাকে?

মহীনের ঘোড়া অন্ধকারের আড়ালে নিজেকে ঢাকে।

 

ফ্লাই ওভারের দিগন্ত ছুঁয়ে শহরের উচ্ছ্বাসে,

বাংলাভাষাকে এখনও বলো কে মন থেকে ভালোবাসে?


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন