শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১

প্রণব পাল

 

কবিতার কালিমাটি ১১২


আলোমনিয়াম

 

ডানাখোলা জানালা বসেছে তাঁবুশ্রামে। মহাকাশি কোয়ার্কে

আলোমনিয়াম বাজানো জোনাকির পাখনায় পা ছড়িয়ে নিচ্ছে

বিপরীত স্যাক্সোফোন। চলমান মানুষের ফটোগ্রাফে

অবসরের ছায়ানাচ। আনছবি হয়ে যাই অ্যালবাম জুড়ে।

ব্ল্যাকহোলিয়াম প্যালেসে মৃত তারাদের স্তুপ। চুরমারবাজীতে

আঙুল নাচাই। এক আকাশ নীলান্তের নিচে অবকাশ বসেছে।

ছুটলেখানো ভাস্কর্যিনী আজও ছুটবন্তী ডানায় খড়ির গন্ডি

আঁকে। জীবন্ত স্বরলিপির লাশ পড়তে পড়তে ঘুমাতুর

পায়ের পাতায় নয়া কচিবুজ জাগে ম্যানুস্ক্রিপটের সবুজ

অক্ষরে। সকালের সূর্য পোষাক বদলায় খিল দেওয়া সন্ধ্যায়।

 

হারানো মোমবাতি খুঁজি পৃথিবীয়ানায়। ঘুষপেটিয়া

বর্ণের লালনে একচোরা ভ্রমণের মানচিত্র। ব্যাখ্যার একবেঘত

দূরে অনন্ত শুয়েছে ডাকা নয় টোকায় জাগাই। ভিনতরাজ

বাউন্ডুল হাতের উঠোনে আজ দম দেওয়া পুতুল ঘুরছে।

বিদ্যাপকের দুধেলি রাস্তায় মূর্খের ফুটপাত। হিসেবী

আঙুলের পাতায় পাতায় গরমিলের বুনো শেকড়। আমাকে

ছাড়িয়ে যায় আমার অজানা। সূর্য থেকে লাফ মারা

আলোমনিয়ামে বেজে উঠি ভোরের পাতায়। ঘুম থেকে

শোয়া উঠছে একাটে সন্ধ্যায়। ভিড়ের বাইলেনে একাম্যাকা

বেড়ানো পায়ের পাতায় মাঠ ও মাটির আহ্লাদ। ছুপকে চাঁদ

খেলছে মগজিয়ামের রোদ্দুর জুড়ে। দূরে জেগে আছে পৃথিবীর

দু’টুকরো শূন্যস্থানে।

 

জলাশ্রম

 

এক টুকরো মানচিত্রে মাথা তুলছে সবুজ মানব। বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডের আন্ডায়

কত আন্ডারস্ট্যান্ডিং। আঙুলে ম্যানুস্ক্রিপ্ট বোনার কুরুশ লিখিত

হ য ব র লয়ের যাযাবরি চাল। একমেঘ জলস্পর্ধায় দেশ টপকায়

মাটির গন্ধমাখা উড়ফুর। কত ঘুমনো গানের আর্তনাদ বাজে

মেধেনীর জলাশ্রমে, কত শ্রমিকার হু হু তুমুল শূন্যাভায়।

একা জাগার অন্ধকার ছটপটিয়ে ওঠে শব্দহীন নাশব্দের

ধ্বনিংকারে। শুধু এক গোঙানির ঙঙাকার আপাদমস্তক

উড়ে যাচ্ছে মেঘান্তিকার সফেদ সনীলে। একঝাঁক বকবিতা

বকবক উড়ে যায় শরতের ফুটফুটে কোলের ভিতরে। ঘুমভাঙা

চোখে প্রাকৃতিক সুরমার স্বচ্ছ নজর। নিজেকেই ফুলবতী

সবুজ লাগছে। চারায় ফুটছে নতুন ভুবনের কাঁচা ইশারা।

রোদান্তরিত সোনা ছলকায় খাতার পাতায়।

 

চাঁদস্নার গান   

 

জাগাই আঙুলের ধিনতারিয়াম। মগজিয়ামের ভিতরে বসবাস।

একটা রূপসা আঁকার শব্দদ্বীপ। শহুরে কোলাহল ও ক্ষুধার্তনাদ

ছাড়িয়ে ঝিমবাদি। স্লিমান্তিকার সবুজ উর্বশিতায় অক্ষর টাল

খায়। চিন্তাতান্ত্রিক দ্বন্দ্বমিতায় পা ও মাথার ঠোক্কর। পায়ের দূরবীণে

কান্নার সেলফিগ্রাফ মুছে অনন্তের শূন্যস্থান ডিম পাড়ছে নয়া

ভূগোলের মানচিত্র। দাঁড়ি ও সেমিকোলোন মুছে যায় চলন গরিমায়।

সুন্দর হচ্ছে ভুলভালন্ত দিকদারী। টেবিলের গা বেয়ে রোদমাখা

তারিখ গড়ালো ভুবন বেলায়। কাঠ পেনসিল বেয়ে নেমে

আসা আমি পুড়ছি টোবাকোর ছায়াপথে। ভূগোল ও গন্ডগোল

হাঁটে গলা ধরে। সমস্ত ছবি তছনছানোর আবহবার্তায় ভরে

স্টাফরিপোর্টার ও তার বিধবা ডায়রী। চোখে আজ

সবুজ ফুটেছে চোখে আজ চাঁদস্নার গান।

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন