কালিমাটির ঝুরোগল্প ১০১ |
ফুটবল ম্যাচ
ফট ফট করে দুচারটে কর্ন ফুটে উড়ে এল। ঢাকনা লাগাতে ভুলে গেছে আয়েশা। ঝটপট প্রেশারকুকারের ঢাকনা বন্ধ করল। নাক টেনে বাটার ডিলাইট ফ্লেভার বুকে ভরে নিল। ঠিক এই গন্ধটার জন্যই সাজিদ লাফালাফি করে। ফুটবল ম্যাচ থাকলে বড় এক বাটি পপকর্ণ চাই তার। সঙ্গে এক গ্লাস ফলের রস দেয় আয়েশা। বড্ড ফুটবল খেলার নেশা ছেলেটার। ইউরোপিয়ান লিগ, কোপা অ্যামেরিকা, ক্লাব লীগ, ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান আরো কত যে ম্যাচ দেখে। বাপ ব্যাটা মিলে হই হই আর বাটার ডিলাইট পপকর্ণ। ফাঁকা সময় পেলেই বল পায়ে রাস্তায়। এই গলিতে গাড়ি চলে খুব। ছেলে কথা শোনে কই। অনায়াসে দু চারটে বন্ধুও জুটিয়ে ফেলে। বারান্দা থেকে দেখতে ভালোই লাগে আয়েশার। ছেলের মতো স্বপ্ন দেখে। সামনের ডিসেম্বরে দশ হয়ে যাবে সাজিদের। তারপর একটা ভালো ক্লাবে ভর্তি হবে। গাড়িটাকে আসতে দেখে সেদিন চিৎকার করেছিল। ছেলেটা শুনতে পেল না।
আওয়াজ থেমে গেছে। কুকার উলটে বড় মেলামাইনের বাটি ভরে নিল। ফ্রিজ থেকে জুস বের করে দুটো গ্লাসে ঢালল। ম্যাচ দেখার জন্যই বাড়িতে গতবছর বত্রিশ ইঞ্চির টিভি এসেছে। সেটা অন করে চ্যানেল ঘুড়িয়ে নিল। এখনো শুরু হয় নি। আজ ম্যানচেষ্টার বনাম লিভারপুলের ম্যাচ। আজকের ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে দুজনেই ভীষণ উত্তেজিত ছিল। এই তো সেদিন ঘুমের ঘোরে পা চালিয়ে টেবিল ঘড়িটাকে ভেঙেছে। মনে পড়তেই ঠোঁটের কোণে চিলতে হাসি এল আয়েশার। সোফায় পা ছড়িয়ে আরাম করে বসল সে। সাজিদ এখানে বসেই খেলা দেখে। একবার দেখে আসবে? ওর বাবা আছে অবশ্য। জেগে উঠলে ফোন করবে বলেছে। টেবিল থেকে মোবাইলটা হাতে নিল। বল পায়ে যে দৌড়চ্ছে তার নাম আয়েশা জানে না। আগে কোনোদিন খেলা দেখে নি সে। সাজিদ থাকলে নামটা জেনে নিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন