রবিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২১

প্রণব বসুরায়

 

কবিতার কালিমাটি ১১১


মেয়াদ

 

চাও বা না চাও, ছাঁকনি একটা থাকেই...

জলে নুন মিশে গেলেও পৃথক করা দুঃসাধ্য নয়

একথা জানা আছে বলেই মন্ডপে মন্ডপে এত ভীড়

সাংবাদিক প্রহরে প্রহরে বার্তা পাঠায়

কোথায় কত হাজার জমেছে তখন।

কে হবে সেরা

সেটা তার আগেই নির্ধারিত হয়ে গেছে যদিও--

আমরাও মিশে যাই স্ফীতকায় হাজারের মাঝে

আর চলতে থাকি স্রোতে ভাসা ডাবের খোসার মতো

আলো দেখি কারুকাজ দেখি বাচ্চাকে কিনে দিই

ঢাউস বেলুন পা ব্যাথা করে খানিক জিরোই

বউকে মাঝ রাত্তিরে ফুচকা খাওয়াই নিজে বেনারসী পান

উৎসবে কানুন শিথিল হয় যেমন ছিটমহলে

দুঘন্টার ছাড়ে মানুষেরা যাতাযাত করে

আমরাও অন্ধকার ছেড়ে আলোর শহরে আসি

 

মেয়াদ ফুরোলেই ফিরে যেতে হবে

ততক্ষণ জলে মেশা নুন হয়ে থাকি

 

ফ্ল্যাগ ইস্টিশন

 

আচমকা পেয়ে যাই পুরনো রুমাল

তাতে কিছু আঁশ লেগে, ন্যাতানো সুতোর...

নক্সাগুলি কিছুটা মলিন, যদিও অটুট

সময়ের স্মারক হিসেবে

 

আমরা সকলেই অগ্রগামী, এ রাস্তা একবার যাবার

তাই কেউ আর ফিরতে পারে না বিগত স্টেশনে

যারা আগে গেছে কোন অভিজ্ঞান রাখেনি এ পথে

দন্ডি হাতে ঠক ঠক চলে গেছেশুধু এটুকু বোঝার

 

নীল ভেঙে আকাশ-রাস্তায় কেন এলো নকশি রুমাল

--- এ প্রশ্নে বিদ্যুৎ ছুঁয়ে যায়, যেন আমি নুনে ভেজা ব্যাঙ!

 

আমাকে থামিয়ে রাখে আলোহীন ফ্ল্যাগ ইস্টিশনে

 

অজানায়

 

সব, যে যেখানে পেরেছে দাঁড়াতেসেখানেই থাক

প্রয়োজনে গাছ ও বাড়ি সরে যাবে--

তবে, নদীটিকে চাই, আউল-বাউল ঘূর্ণনও চাই

 

সান্ত্রী থাক আছে বলে পাশের পাড়ায় দৃষ্টি যায় না

কী তাতে আমার ক্ষতি? সে ময়না মরুক না হয়,

সৎকার হয়ে যাবে যা হোক তা হোকসন্দর্ভ

আসবেই ঠিক। উদ্বেল এক ফোঁটা জল লুকিয়ে মুছতে

সাদামাটা রুমাল, চশমা তুলে অনায়াসে শুষে নেবে...

 

ঘুম পেয়ে যায় খুব, অসময়ে নরম বিছানায় বালিশ আঁকড়াই

ও দিকে রাত্রের সুর কখন যে বেজেছিলো, থাকে অজানায়--

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন