কবিতার কালিমাটি ১০৭ |
এপার-ওপার
(১)
অনেক
বছর
একজন
বাইরে।
আকাশ
লালচে
ঘন
ঘন বিজলির চমক
বাজের
গুরু গুরু শব্দ
ঝম
ঝম বৃষ্টি
সিকিউরিটির
হুইসেল
স্মৃতি
বিস্মৃতি
লুকোচুরি
খেলে;
বাইরে
একজন
ভিজেই
যাচ্ছে
চোখের
জলে,
আর
বৃষ্টির জলে,
ভিজছে
অবিরাম।
(২)
প্রতিটা মুহূর্তে মৃত্যুকে দু'হাত দিয়ে
সরিয়ে সরিয়ে এগুতে থাকা… এর
মানেই বেঁচে থাকা। ক্লান্তিহীন দৈব
অভিসম্পাত আগুনে অবিরাম
জ্বলতে থাকার কিংবা অন্ধকার এবং
সাপখোপের যাবতীয় শিশুতোষ ভয়
বিলীন – সে তো বহুদিন। কেবল
অস্তিত্বহীনতায় কোনো এক অজানা
বোধে যদি হই একা… সে তো ঘোর
অন্যায়, অনন্তকাল বাস করা একা!
আহা, যাদের সাথে দ্যাখা নেই বহুকাল,
কিংবা যারা মিটে গ্যাছে
এইতো সেদিন-
মিলতে পারি যদি তাদের সাথে, সে
যে কোনো অবয়বে - তাহলে এক্ষুনি
সীমাটা পার করে যাই প্রস্তুতিবিহীন।
(৩)
কাঠের সিঁড়ি বেয়ে ধীরে ধীরে
তেতলা দালানটিতে উঠো, অতি
সন্তর্পণে কড়া নাড়ো : ‘বাড়ি আছো
নাকি?’ ওপাশের নিস্তব্ধতা গলা চেপে
ধরে; দানা বাঁধে ক্রমে দ্বিধা আর
অনিশ্চয়তা। ওখানে তুমি
অচেনা।
আসলে তুমি নও, সেই উন্মত্ত সময়ে
বেঁচেছিল অন্য আরেকজন। ভাবো,
বাতাসে ভেসে আসা দূরাগত বাঁশির সুর
আর হৃদয় ক্ষণিকেই লাল নীল প্রজাপতি;
ব্যালেরিনা নেচে চলে, নিজেকে হারায়
তুরীয় আনন্দে, মনে করো সেই নাচের ঘূর্ণি।
তুমি নও, সে অন্য আরেকজন।
জ্যোৎস্নায় ভিজে আকাশ পাড়ি দেয়া কিংবা
শ্রাবণের জলে কাকের মতো ভিজে ঘরে
ফেরা উচ্ছল, নিরুদ্বেগ, শঙ্কাহীন তরুণী।
জীবনের অমিতাচার এখন তীব্র
বিবমিষার, দিনগুলি গতানুগতিক আর
কেজো এখন। মুখোশে লুকোনো মুখ দেখে
আমোদ হয় ভীষণ, মোহন মুহূর্তগুলি
তালাবন্ধ দেরাজে, সাথে সেই হারানো একজন।
যে তুমি নও, অন্যজন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন