কালিমাটির ঝুরোগল্প ৯৩ |
সে
সে ঘুরেফিরে বারবার আসে। নানা কাজের ছুতো করে আসে, এটা সেটা দেয় বা চায়। তারপরেও চুপচাপ বসেই থাকে আর একটু পর পর বলে, আপনাকে একটা কথা বলবো।
আমি উদাসীনভাবে বলি, বলেন।
সে বলে, হু। তারপর চুপ করে থাকে। আমি আমার কাজ করতে থাকি।
সে যাই বলেও বসেই থাকে, পা নাচায় অনবরত। আমি বলি টেবিল নড়ছে, লিখতে
পারছি না। সে ওহ সরি বলে লাফিয়ে উঠে দাঁড়ায়। অভিমানাহত কন্ঠে আবার বলে, যাই। তারপর কয়েক পা হেঁটে পাক খেয়ে টেবিলের কাছে
এসে বলে, এক কাপ চা’ও খাওয়ালেন না তো!
একদিন বলি, বলবেন বলবেন বলেন, কিন্তু বলেন না তো! সে বলে, হ্যাঁ বলবো। কিন্তু এখানে না। তারপর কোথায় আলাপটা হতে পারে তা নিয়ে কিছু ভাবনাচিন্তা হয়, কিন্তু সিদ্ধান্ত হয় না।
তার লেজেগোবরে অবস্থা দেখে আমি হাসতে থাকলে সে বলে, কী করে বলি, বলার
মুখে জল ঢেলে দেন। আমি হাসতে হাসতে বলি, এর নাম জলচিকিৎসা।
সে অসহায় মুখে আমার হারামিপনা দেখে শুধু, কিছু বলতে পারে না।
এভাবে আরও একটি দিন যায়। হতে পারে ছ’মাস, আটমাস বা একবছরও হতে পারে। একদিন সে বলেছিল, তার একটা অসুখ হয়েছে। সেদিন বলেনি কী অসুখ। আমিও আগ্রহ দেখাইনি, কিছু একটা আঁচ করতে পেরেছিলাম।
এখন হয়তো সেও আঁচ করতে পারে যে, আমি চাই না কথাটা সে বলুক। আর তাতেই কথাটা বলতে গিয়ে আড়ষ্ট হয়ে যায় সে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন