কবিতার কালিমাটি ১০৭ |
অকুলিন শব্দাবলী
রৌদ্রপোড়া শহর
যাওয়া আসার
ক্লান্তি ঝুলে দুপুরের ছাদে।
শীর্ণ শ্রমজীবি
হাত,
চামড়া ঠেলে
জেগে আছে যেন
নদীর রেখা মানচিত্রের
গায়ে
কোলাহল আর নানাবিধ
লেনদেনে
হারিয়েছে অবান্তর
উড়োউড়ি।
অন্ধ এখন চারু
চোখের মুগ্ধবালক
পুনরপি বন্ধ্যা
সময় পার করে যায়
রঙিন ফিতে জোড়া
বেণীর ব্রততী শাখা।
বস্তুত অসম
বিন্দুতে ভাগ হয়ে গেছে
পৃথিবীর আবাস
ও জাগতিক অনুভব।
পালার আসর থেকে,
বিষণ্ণ ভাটি্যালি থেকে
দূরত্বে নিয়ন্ত্রিত
সরে যাওয়া
আর্য বাতাসের
অভিমুখে
মুঠো মুঠো ছন্দের
দীর্ঘ অন্ত্যমিল।
আর, অকুলিন
মুদিখানায় কেবলই
ঘনহয়ে আসে শীতের
উপাখ্যান।
অভিজ্ঞানে নির্দোষ
সিলমোহর
আমাদের উঞ্ছবৃত্তির
অপরিহার্য প্রান্তিকে গুঁজে দিয়ে যায়
অসামাজিক শব্দাবলি।
সকল অনুরক্তি
আর একটা ঝড়ের
শহর আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে,
হিম ঝরে পরে
টুপটাপ,
চুল থেকে, আঙুল
বেয়ে শিশিরের কান্নার মতো।
যাবতীয় অনুষঙ্গ
ছায়ার শরীর নিয়ে
অভিষ্ঠ গন্তব্যের
বিপরীতে চলে গেলে
চোখ থেকে মুছে
নিয়ে ক্ষত -
প্রাণপণে দেখে
নিব দোলের উৎসব,
রং ছুঁতে গিয়ে
বিবিধ ভঙ্গিমার কাছে
থমকে থাকা আলো।
প্রকাশিত বাক্যের
পবিত্র দ্যুতির মতো
বিলি হয়ে যাওয়া
সু-খবর।
রাত্রির নিভৃতে
পৃথিবীর অলিগলি বেয়ে,
আবাসিক লেনদেন,
ফিসফাস
অদৃশ্য দেয়ালে
বাড়ি খেয়ে
ফিরে এলে দুরাত্মার
হামাগুড়ি ,
নিখিলের পাঁজরের
কাছে
বেজে যাক উদিত
ওয়াক্তের উচ্চারণ।
সন্তাপ
মরা নদীর রেখা
আর বিষণ্ণ আকাশ
পৃথিবীর গভীর
থেকে উপড়ানো
বোধিবৃক্ষের
শেকড় বাকড়
ঝরা পালক, মৃত
পাখিদের ডানা
এইসব নিয়ে বেড়ে
যাওয়া সন্তাপ সাথে
মানুষ রাত্রি
ডেকে নিয়ে ঘুমিয়ে থাকে।
আলো ছড়িয়ে সকাল
এলে
বসুধা জাগে,
কাছাকাছি রোদ ছুঁয়ে
বোধের প্রান্তিকে
মানুষের দল
করুন কান্না
থেকে দূরে সরে
আনন্দ খুঁজে
প্রাণপণে
সঙ্গীতে, মন্দাক্রান্তা
ছন্দের ভিতরে
অষ্টপ্রহর।
তারপর দূরবর্তী
চলে যাওয়া পথে
গণিকাদের রাত
শেষের করুণ গান
সকালের ঘাসে
তাদের রক্তমাখা ছেঁড়া ঘুঙ্গুর,
প্রাচীনতম মনস্তাপ
নিয়ে ক্রমশ ঢুকে যেতে থাকে
পৃথিবীর গভীরে।
খুব ভালো লাগল। ভালো থাকবেন। অকুলিন শব্দাবলী কেন? এ শব্দাবলী তো কুলিন ব্রাক্ষন। বিমল চক্রবর্তী, জামশেদপুর।
উত্তরমুছুন