মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০

তৈমুর খান

 

কবিতার কালিমাটি ১০৭


জাল ফেলছে

 

পাতায় পাতায় আলোর কারুকাজ

ভোর নামছে মেঘের সিঁড়ি বেয়ে

ক্ষয় হচ্ছে শিশির সোনার আয়ু

পানকৌড়ি ডুবছে ভাসছে জলে

তরল কোনও চেতনার গানে

স্বরলিপি বেজে উঠছে জলের কম্পনে

 

স্থলমাছ ছুটছে দলে

রঙিন পোশাক

তাদের মাঝে দু’একটি নষ্ট জেলে

জাল ফেলছে

 

ব্যর্থ সব ছেঁড়া ও ধূসর জাল

আমি একা ঢুকে যাচ্ছি রোদের তাঁবুতে....

 

পিছিয়ে পড়া মানুষ

 

পিছিয়ে যাচ্ছি

পিছিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছি

লাগাম দেওয়া ঘোড়াগুলি

এগিয়ে যাচ্ছে

ঘোড়ার পিঠে ঘোড়সওয়ারী

লাল টুকটুক মুখগুলি

হাসতে হাসতে চলে যাচ্ছে

পথের ধুলো উড়ে আসছে

আমার দিকে

ধুলোয় ঢাকা ভবিষ্যৎও

পাক খাচ্ছে

পাক খাচ্ছে

এই বিকেলে কারা এত রঙ মাখছে?

হৃদয় নেই?

খাঁচার ভেতর টিয়াপাখি ডেকে উঠল

ডেকে উঠল

শুনতে পাচ্ছি —

আমি একা পিছিয়ে পড়ছি

ধুলো এসে পাক খাচ্ছে...

 

কতটা একা হলে      

 

কতটা একা হওয়া দরকার

এই ভেবে মাটির কাছে আসি

গাছের সাথে কথা কই

পাখিদের গান শুনি

 

এইখানে নদীর বিহ্বল ঢেউ

দেখতে দেখতে উদাসী মায়ায় ডুবে যাই

পাতাগুলি নৌকা হয়ে ভাসে

 

আকাশে অলীক পাখি ডেকে যায় কতটা একা হলে

আমি নিজেকেও ভুলে যেতে পারি!

 

 

হয়তো

 

অনেক মৃত্যু নিয়ে সংসার

শূন্যস্থানগুলি কিছুতেই ভরাট হয় না

বর্ষার জল জমে, আগাছা জন্মায়

বুনোলতার ফুল ফোটে

 

দেখতে দেখতে বৃদ্ধ হই

 

হয়তো হাওয়া উঠবে

হয়তো ভেসে যাবে দক্ষিণের মেঘ

হয়তো চড়ুই পাখি উড়ে যাবে

অনন্তের দিকে...

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন