কবিতার কালিমাটি ১০৬ |
বিশ্বাসের পথ দিয়ে অবিশ্বাস যায়
বিশ্বাসের পথ
দিয়ে অবিশ্বাস যায়
বিশ্বাসের মতো
ওর চুল ওড়ে
রঙিন ঠোঁটের
মধু ঝরে
চিবুকের একটি
তিল চিহ্ন হয়ে ঘোরে
দাঁড়িয়ে থাকি।
বহু বৎসর পর
আবার আবেগ তালি দিলে
নতুন পোশাকে
আয়নার সামনে দাঁড়াই
আবার জ্যোৎস্নার
হাসি ফুটে ওঠে
দেখতে দেখতে
একটা মিথ্যার দেশে
আমাদের যুগ
আমাদের ঘর সংসার
মহাকল্লোল
ধুলোময় যুদ্ধের
ভেতর বাক্যবাণ ওড়ে
মর্মের বিষাদে
ছবি আঁকা দিন কাটে
আহত সৈনিক
এত আলোর গান
কারা গায়?
তাঁবুর ভেতর
অন্ধকার
অন্ধকারে যুদ্ধ
আমাদের
কার সঙ্গে যুদ্ধ?
প্রতিপক্ষ কারা?
নিজের সম্মুখে
নিজে জেগে আছি
নিজের সঙ্গেই
যুদ্ধ করা!
নিজেকেই চেনা
যায় না
আদিম রক্তের
ধারায় ভেসে যায় আলো
ক্ষতগুলি বেঁধে
রাখি বারবার
সংযম কোথাও
নেই
আত্মবিষণ্ণ
মাঠ জুড়ে
মর্মের স্বপ্নিল
পাখিগুলি উড়ে যায়
অথর্ব পরাজিত
বসে থাকি
আহত সৈনিক এক
চারিপাশে বিদ্রুপের
ঘোর বজ্রধ্বনি
নৈঃশব্দ্যের পাড়ায় মেঘ জমে
নৈঃশব্দ্যের
পাড়ায় মেঘ জমে
গার্হস্থ্য
বিকেলে ভয় নাচে
আমরা পুতুল
হয়ে খোকা ও খুকুর ঘরে
শুয়ে থাকি।
আমাদের বিবাহ
উৎসব
প্রচলিত বাল্যধারণায়
প্রবেশ করি
ফুলশয্যায়।
আনন্দ ব্যঞ্জনে
মিষ্টি মুখ
আহা কত কত মিষ্টি
শাকপাতা ধুলোমাটি...
যদিও পুতুল,
ব্যাকুলতা স্পর্শ করে
ঘুমের আড়ালে
অজাগর
কষ্টগুলি নোনতা
ফুলের মতো ফোটে
বাতাসের বাজনায়
আন্দোলিত কোনো গান
ঘুরেফিরে আসে
মৃত ও জীবিত
সমুদ্র উথাল পাথাল...
আমার সর্বনাম
নিজেকেই ডেকে
ডেকে ফিরি
নিজেকেই খুঁজে
খুঁজে ফিরি
এই বনপথ, এই
হ্রদ, লজ্জাবিহীন সীমানা
কোলাহল সাঁতার
সঙ্গম পর্যাপ্ত আঁধার
আলো আর দেহ
আর অব্যক্ত গান
গাছে গাছে মর্মর
আবেগ
কাঁপা কাঁপা
অনিঃশেষ তোলপাড় কাম
স্রোত বয়ে
যায়
জলে কার ছায়া?
রা দেই আমি আর আমার সর্বনাম ...
ঈশ্বরের মুখ
প্রাচীন মন্দিরের
গায়ে ঘণ্টা লাগানো আছে
আর এই ঘণ্টা
না বাজালেও বেজে যায়
বিমূর্ত ধারণা
থেকে পাওয়া এইসব ঐশ্বরিক
মুহূর্তগুলি
পার্থিব অপার্থিবে
যাওয়া আসা করে
কিছু কিছু মানুষ
দৈবদূতের মতো আগুন লাগা বাড়ি থেকে
পোয়াতি নারীকে
বাইরে বের করে আনে
অথবা ভয়ঙ্কর
সামুদ্রিক ঝড়ে ডুবে যাওয়া জাহাজের
ভাঙা পাটাতন
যা তীরে পৌঁছে দিতে পারে
হিরণ্য রোদের
দেশে বাউলের গান নিঃস্ব মানুষের তরি
অথবা মৌসুমি
বায়ুর আশ্বাসে কৃষকপাখির পরান নাচে
এক একটি ফুল
দেবতার নামে ফোটে
দৈবভিখারি মানুষ
স্বর্গ বানায় ধুলোঘরে
রাতের পাথর
কার সুখ কে
নিয়ে নেয়
ভাবতে ভাবতে
অসহায় লাগে
কান্না কি শুধুই
চোখের জল?
সব কান্না জল
হয় না
কান্নাও পোড়া
এক ছাই
রাতের পাথর
সরাতে সরাতে
শেষ হয় আয়ু
নিভৃতে এত কার
কথা ভাবি?
সে কি কোনও
আলো?
আলোও তো ভ্রম
হতে পারে!
সেই ভ্রমের
কাছে যাই বার বার
দেখি পদ্ম ফোটে
বিলে
কাঞ্চন রঙের
মেঘ পালকি সাজায়
ইচ্ছা ও ইচ্ছার
বর সেখানে গিয়ে বসে
শ্রমের ঘামে
ভিজে ভিজে আমি ক্ষয় হই।
যদিও শয্যা
আছে, শয্যায় ঘুম
বিশ্বাসী পায়রা
এসে ডাকে
কে কাকে কতটুকু
বোঝে?
প্রদীপ নিভিয়ে
দিই
একা একা বসে
থাকি প্রদীপের কাছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন