কবিতার কালিমাটি ১০৪ |
ভোরের বয়স
কত রাত ঠিকরে
পড়ে
চোখের মতো বাঁকা নীল উপকূল
রঙিন ঋতু সময়ে
বিষণ্ণ স্থির
একে একে নৌকোরা
দাঁড়হীন ভাটার ঢেউয়ের টানে
রাতভর যায় একটানা
উড়ে আসে সমুদ্র
পাখির ঝাঁক
ঠিক ভোরে তোলে
না সেই আবেগ
আমার জীবনের সাথে
ঋতু ভোরে কেটে
যায়
ভোরের বয়স...
স্মৃতিকথা
ভাড়া ঘরে পাথর
হয়ে আটকে গেছে আমার পনেরো বছর
হেঁটে যাওয়া
শৈশব
ছিঁটকে খই-এর মতো
আগুনের তাপে
স্বপ্ন পোড়ে
জন্মঘর মাটির
সাথে চাঁদ
সে-ও তাকায়
চোখের ভেতর
ধূলোপড়া বিছানা
বুকের উপর নির্মাণ
তবুও পুকুরের
পাড়ে সজনে গাছ
এখনো আমাকে
চেনে
মাথার ভেতর
মায়ের চোখজোড়া
হৃদয়ে চাঁদের
সাথে
সারারাত আটকে
যাওয়া পাথরে
শৈশব কৈশোর
গলে পড়ে।
কাঁথা
মায়ের দেওয়া
একটা কাঁথা
মৃত্যুর পর
আশীর্বাদ পেয়েছিলাম
শীত-বর্ষা ধরে
কাঁথাটি
খোলা ঘরে চাঁদ
ভাঙলে
কাঁথা থেকে
আদর ঘ্রাণ ছড়িয়ে আকাশে
কতগুলো তারা
নাক বন্ধ করে
পূবে-পশ্চিমে
ঘোরে
আমার কাছে তখন
একটা তারা
কাঁথাখানি জড়িয়ে
দেয়
মায়ের স্নেহ
ভরে।
শ্রম
শ্রম ফেরি করি
হাঁক দিয়ে ডেকে
যাই
এপাড়ায় ওপাড়ায়
কেউ করে অপমান
নাবালক শ্রমিক
ভেবে
কেউ বা বাড়ি
ফিরে যেতে বলে
মনেতে বাধা
অনাহারে পেট জ্বলে
ফাঁকা রাস্তা
থেকে মা ডেকে ডেকে আসে
সূর্যের তাপে
মায়ের শাড়ি গলে গলে
সারা শরীর পোড়ে
মায়ের শ্রমে
তৈরি
আমার শরীর
শ্রমের জন্য
বন্ধকি রাখি
খোলা ফুটপাতে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন