কালিমাটির ঝুরোগল্প ৮৮ |
জিরো ওয়াট
ঘুমহীন রাতগুলো যখন সাঁতারে পার হতে হয়, ভুলবশত চোখগুলো নোঙর ফেলে দেয় ঝুলমাখা নাইট বাল্বগুলোর কিনারায়। পিংপং বলের মত লাফালাফি না করে, শুধু ঘ্যাঁট হয়ে বসে থেকেও কতকিছু করে যায় ব্যাটার ছেলে। এই বস্তুটাকে মাঝে মাঝে ঘড়ি লাগে। চারপাশের ল্যাম্পপোস্টগুলো হাল্কা চাদর টেনে পাশ ফিরলেই, কোথা থেকে যেন ওই পুঁচকে ব্যাটা জোর পেয়ে যায়। তখন তার চোখ রাঙানো কাকে বলে! এই মারে তো সেই মারে! তাও... রাতের সঙ্গে পেরে উঠবে কেন!
তবুও ওই পুঁচকে ছোঁড়াকে কোনওদিন
হেরে যেতে দেখলাম না। বরং রাতটাই কেমন করে যেন মিলে মিশে যায়, অথবা ক্লান্ত হয়ে বাধ্য চড়াই পাখির মত বসে থাকে ঝুলমাখা গোলাকার
রঙিন মাথাটার ওপর। এদের মধ্যেকার সমীকরণটা তখন রাতের চেয়েও কঠিন লাগে। রঙিন ওই
গোলাকার পিন্ডটাকে মাঝে মাঝে মনে হয় সে চূড়ান্ত লড়াই করছে। লড়াই করছে
নিজের অস্তিত্বর জন্য। বিছানার পাশের ছোট্ট টেবিলটার অ্যালার্ম ঘড়িটা
যেন জানান দিচ্ছে তারই।
আবার হয়তো কখনও, মিশে যেতে চাইছে ওরা। রাতের সংজ্ঞা
তখন বদল হয়ে যাচ্ছে। কালো রাতের গা বেয়ে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে নীলআভা। এ যেন কৃষ্ণের সঙ্গেই কৃষ্ণের মিলন।
এরা রঙিন… এরা উজ্জ্বল... এরা স্থি্র... এরা অনেক... এরা এক...
খাতায় কলমে এরা দুর্বল। তবু এরা চোখে চোখ রাখতে পারে। কাঁধে কাঁধ রাখে একে অপরের। হাসে, কাঁদে(হয়তো), জেতে, হারে।
হাঁটু মুড়ে সমর্পণ করে নিজেদের।
দিনের শেষে এরা আলো। তবু অন্ধকারের সাথে এদের বিরোধ নেই। এরা হয়তো শুধু হাত ধরে পার
করে দেয় রাতকে।
উল্টোদিক থেকে সকাল এলে নিঃশব্দে
লুকিয়ে পড়ে আবডালে।
তারপর…
আবার রাত…
আবার যুদ্ধ…
আবার...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন