কালিমাটির ঝুরোগল্প ৮৮ |
কোমর্বিডিটি
মামার বাড়ির জমি ভাগাভাগি করে পাঁচিল
উঠে গেছে। এই জমির একাংশ বিক্রি করা হল ছোটমাসির বিয়ের পণ দেবার জন্য। একদিকে আছে
ডোবা। রোশনি ছিপ হাতে ডোবার ধারে চলে গেল। কী জলভরা বোবা! তালশাঁসের জলের সঙ্গে মিলে যায়। দাদুও ছিপ নিয়ে বসে পড়ল ওর পাশে। পুঁটি
ফেলে ল্যাটা টপাটপ কেঁচোমিশ্রিত ভাত খেতে লাগল। আচমকা ডোবা থেকে উঠে এলেন চিকিৎসকের
ধড়াচূড়ো পরা উকিল, হাতে এক গুচ্ছ কাগজ। রোশনি এভাবেই খালি সুতোর রিলেতে গুটিয়ে রাখে। মাঝে মাঝে ছেলেকে
দেয় খেলতে। ছেলে? তাকে তো বাজারের জলসায় বসিয়ে রেখে এসেছে! তারা ইঁট পেতে দেখছিল তারা ভোঁ-ভা। সে ছোটাছুটি করে নাম ধরে তীব্র
চিৎকার করতে লাগল। ছেলেকে পেল না।
দেয়াল থেকে কাচের ছবিটা ভেঙে পড়ল ঝনঝন
শব্দে। প্রচুর কোমর্বিডিটি ছিল নাকি ছবিটার! একটি ত্রিশ বছরের যুবক ডোবাটির দিকে হেঁটে
চলেছে ধীরে। পরনে শর্টস। মাথার চুল সব ঝরে পড়ছে ধীরে ধীরে। সারা গায়ে কালির ছোপ ফুটে
উঠছে। রোশনি অনুভব করছে মুখগহ্বর থেকে ওর দাঁত আসে পড়া। ক্রমশ শীর্ণ পিঠের পাঁজর ফুটে
উঠছে। অযত্নলালিত দাড়ির জঙ্গলের আভাস গালের পিছন থেকেও বোঝা যাচ্ছে। ওঃ! হাত ও পায়ের
নখ কী বড় বড় হয়ে গেল! হঠাৎ চামড়া ফেটে
জলরস বেরিয়ে আসছে। এরপর... ঝাপসা হয়ে যায়
চোখ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন