কবিতার কালিমাটি ১০৩ |
আগুনপাতা
(ক)
চাঁদের আলোয় প্রথম বসন্ত
শরীর জুড়ে রোম
হন্যে শহর রাজকন্যে খোঁজে
স্তব্ধতা বোনে ওম।
(খ)
তোর সাথে একলা ঘরে
মাস পয়লার চাষ
রক্ত শরীর -- রিক্ত নাভী
নিষিক্ত আর্তনাদ।
(গ)
তবু রোজ আমি ঘরে ফিরি
আলগোছে তাকাই ভেজা জানালায়
কার্নিশ বরাবর সাজানো আমাদের স্বপ্ন
আর চুন খসে পড়া তোর দেওয়াল লিখন।
তবু আমি রোজ ঘরে ফিরি
বাড়া ভাত মাখার অপেক্ষায়
ভালোবাসায় ভেজা যত শুকনো আলুর খোসা
একসাথে মেখে আমাদের চিলেকোঠা।
তবু রোজ আমি ঘরে ফিরি
তোর রেখে যাওয়া গন্ধ কুড়োতে
সন্ধ্যে পোড়ানো মালসা নিয়ে
স্মৃতি দিয়ে খেলাঘর বানাতে।
ভালোবাসা, সে তো বহুমাত্রিক।
শরীর বা সম্পর্কের রূপক ছাড়াও তার অনেক সংজ্ঞা থাকতে পারে,
ভালোবাসা মানে শুধু ঘরে-বাইরে বা পদ্মিনী যে তাও নয়, বরং মৈথিলী পুরাণ
থেকেই শুরু এর দাপট।
এক জাতিস্মরের খোঁজে নব কলেবর ধারণ করে এক ব্রহ্মা কাটিয়ে দেওয়া, সেও তো
ভালোবাসা। ভালোবাসা আছে তাই তো মৃত্যুর মধ্যে যুগে যুগে অভিব্যক্তি ঘটেছে
শ্রীচৈতন্য থেকে আরশি নগরের পড়শির।
ভালোবাসা আছে বলেই, দুটো প্রোটন জন্ম দিয়েছে হিগস-বোসন,
ভালোবাসার মধ্যেই একমাত্র পাবে সমান্তরাল-মহাবিশ্বের ইকুয়েশন।
আদিম থেকে আদিমতর দিকে যত যাচ্ছি, বাতাসে রক্তের ঘ্রাণ ততই ম্লান।
স্বরপুঞ্জে শঙ্কিত কুহেলিকাদের সমাবর্তন, নামাবলি নামিয়ে আরো এগোতে থাকলাম।
ভিজে শরীরটুকু শুধু, বাকিটা ম্লেচ্ছ, দ্বিপ্রহরে দলিত গন্ধে দাহ্য। যতদূর
দেখা যায় মরা জাঙ্গাল, শুষ্ক নারকেলের
ফাঁপরের মত বেড়িয়ে আসা রিক্ত বেয়নেট।
কাঁকে হুলিয়া জড়িয়ে সাঁওতাল হরিণী, গন্ধটা চেনা বারুদে জায়মান।
আত্ম মেহনায় কিছু ধূসর উড়ে আসছে আমার দিকে, ক্রমশ ঠেলে দিচ্ছে তহুলিক, তমসি
উজান চড়ায়।
আমি ওয়াটসের কাব্য হবো, আমি ফ্রয়েডের মানস কন্যে,
হঠাৎ এক উঠোন গন্ধক এসে স্বপ্নে জারিত হয় ভোরের গঙ্গাস্নানে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন