কবিতার কালিমাটি ১০৩ |
মুদ্রা
এ টি এম এর সামনে
লম্বা লাইন
মানুষজন জামাই আদরে টাকা তুলছে
গোনারও দরকার হয় না যাদের তারা
পকেটে ঢুকিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত
হয়তো জলে স্থলে আকাশপথে
পাশে ভিখিরি হাঁ হয়ে দেখছে
আকুতিভরা চোখে সকরুণ হাতে
কে দেবে উদার হৃদয়ে দু’একটি মুদ্রা
জীবন্ত শরীরে কিঞ্চিৎ জেগে উঠবে স্পন্দন
হোটেলে
হোটেলে দিচ্ছে কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট
যে যা পার খাও … মনে পড়ে
আমরা ছিলাম জড়াজড়ি করে সাতজন
টানাটানির সংসার নুন আনতে পান্তা ফুরায়
কলমিশাক জংলী কচু পাশের জঙ্গল থেকে
যাবতীয় কন্দ আহারযোগ্য লতাপাতা
ডোবাপুকুরের জল ছিঁটিয়ে কোনওদিন
কই মাগুর চুনোপুঁটি কখনও খোলা বারান্দায়
চাঁদের আভায় অথবা টিমটিমে কুপির কৃপণ
আলোয় রাতের সাদামাটা ভাত নুন লংকা পেঁয়াজ।
ডিগলিপুরের
পথে
রাস্তার উপর সেই বাস
বাসের গায়ে লেখা – ডিগলিপুর
সামনে ঝুলছে প্লেট তাতে লেখা
আছে - ব্রেকডাউন
যাত্রীসব ঝটপট নেমে কে কোথায়
কেজানে, ড্রাইভার
কন্ডাক্টার পাশের
চায়ের দোকানে চায়ের কাপে চুমুক
দিচ্ছে আর মসগুল হয়ে আছে খোশগল্পে
বউ বাচ্চা ঘর -- তারা তো আর
বুকে
ভাঙাচোরা প্লেটে ‘ব্রেকডাউন’
কথাটা
লাগিয়ে বিষণ্ণ বাসটির মতো রাস্তার
একপাশে চুপটি করে অসহায় হয়ে
দাঁড়াতে পারে না-- তপ্ত রোদ
ছোঁয়া
সমুদ্র তীরবর্তী এই শহরে ভ্রমণে এসে
ভ্যাবাচ্যাকা মনমরা আমরা ক’জন
সামনে
দেখছি নোনা ঢেউ পিছনে নিবিড় বনানী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন