নাকের সমান্তরালে মৃত্যু
মিতালী হতভম্ব হয়ে শাশুড়িকে ঠেলল একটু। ভদ্রমহিলা এমন ভাবে ঘুমোচ্ছেন যেন জেগে আছেন। দলা দলা সাদা মেঘ হয়ে আছে ওনার শরীর। চারদিকে ঘন সবুজ বড়ো বড়ো গাছ। একটা গাছের নিচে উনি ঘুমন্ত। মহাভারতে দেহত্যাগের আগে যেভাবে প্রায়োপবেশনে থাকতেন উচ্চবর্ণের নরনারীরা, ব্যাপারটা অনেকটাই সেরকম। অথচ শাশুড়ি বুঝতে পারছেন যে মিতালী এখানে এসেছে, সেটা মিতালী অনুভব করল। এখানে মানে নরক। মিতালীর শাশুড়ি পাঁচ বছর হল পৃথিবী ছেড়েছেন। মিতালী ওষুধের দোকানে কাজ করত একসময়। ইদানিং আর পারে না। অশোকের সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক তিক্ত হয়ে গেছে বহুবছর হল। একে তো চল্লিশের পরে বিয়ে করল আগের পক্ষের মেয়েকে নিয়ে। অশোকেরও আগের পক্ষের বৌটাকে ছেড়ে দেবার পর খুব দামী মনে হচ্ছে ইদানিং। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত বলে ওদের প্রেম আবার ওই ভিক্টোরিয়ার মাঠ পর্যন্ত হাঁটাহাঁটি শুরু করেছে। মেয়ের বিয়ে দিয়ে একটি নাতির মুখ দেখেছে মিতালী। অশোকের কাছে সত্তর বছর বয়সটা কিছুই না। ওয়েল্ডিং মেসিনের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে কাজ করে যায়। মজবুত শরীর। কিন্তু মিতালীর আর ভালো লাগে না। মিতালী শান্ত হয়ে গেছে। থেমে গেছে।
মিতালী হতভম্ব হয়ে শাশুড়িকে ঠেলল একটু। ভদ্রমহিলা এমন ভাবে ঘুমোচ্ছেন যেন জেগে আছেন। দলা দলা সাদা মেঘ হয়ে আছে ওনার শরীর। চারদিকে ঘন সবুজ বড়ো বড়ো গাছ। একটা গাছের নিচে উনি ঘুমন্ত। মহাভারতে দেহত্যাগের আগে যেভাবে প্রায়োপবেশনে থাকতেন উচ্চবর্ণের নরনারীরা, ব্যাপারটা অনেকটাই সেরকম। অথচ শাশুড়ি বুঝতে পারছেন যে মিতালী এখানে এসেছে, সেটা মিতালী অনুভব করল। এখানে মানে নরক। মিতালীর শাশুড়ি পাঁচ বছর হল পৃথিবী ছেড়েছেন। মিতালী ওষুধের দোকানে কাজ করত একসময়। ইদানিং আর পারে না। অশোকের সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক তিক্ত হয়ে গেছে বহুবছর হল। একে তো চল্লিশের পরে বিয়ে করল আগের পক্ষের মেয়েকে নিয়ে। অশোকেরও আগের পক্ষের বৌটাকে ছেড়ে দেবার পর খুব দামী মনে হচ্ছে ইদানিং। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত বলে ওদের প্রেম আবার ওই ভিক্টোরিয়ার মাঠ পর্যন্ত হাঁটাহাঁটি শুরু করেছে। মেয়ের বিয়ে দিয়ে একটি নাতির মুখ দেখেছে মিতালী। অশোকের কাছে সত্তর বছর বয়সটা কিছুই না। ওয়েল্ডিং মেসিনের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে কাজ করে যায়। মজবুত শরীর। কিন্তু মিতালীর আর ভালো লাগে না। মিতালী শান্ত হয়ে গেছে। থেমে গেছে।
অশান্তি পাকদন্ডী হয়ে গেঁড়ে বসেছে তার নয় নয় করে বছর পনের। মেয়ের বাড়িতে গিয়ে উঠতে চায় না মিতালী। বাংলা ভাষায় যা কিছু অশ্লীল শব্দ আছে তার ব্যবহার শেষ পারস্পরিক ভাবে। শেষ অশ্লীল শব্দটি হল মৃত্যু। একে অপরের জন্য এই একটাই চাহিদা। এমনিতেই অশোক সন্দেহ বাতিকগ্ৰস্ত। বিয়ের পর এই করে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করল মিতালীকে।
মিতালীর শাশুড়ি মিলিয়ে যেতে ও একবার ওষুধের দোকানের পবনদাকে দেখতে চাইল। পবনদা অশোকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিল। পবনদা খুব নরম আর স্নেহশীল ছিল। সেও অসুখে ভুগে মরল। মনে করা মাত্রই দূরে পবনদাকে দেখা গেল। পবনদার মাথায় এত চুল এল কোত্থেকে? মিতালী পবনদার কাছে যেতে চাইছে। পারছে না।
হঠাৎ সে একটা উঁচু পাঁচিল ঘসটে পড়ছে। একটা খেলার মাঠ ওর নাকের সামনে। মাঠে অশোক হাফপ্যান্ট পরে ছুটছে একা। হাসিমুখে গোল গোল করে চেঁচাচ্ছে। মিতালীকে দেখতে পেলেও নো কেয়ার ভঙ্গি। মিতালী হাঁপাচ্ছে। বলতে চাইছে, শুনে যাও। অশোকের পায়ে কল্পিত বল। অচেনা গোলপোস্টের দিকে ছুটে চলেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন