ভারতের নদনদী
ভারতের নদনদী পড়তে পড়তে, তের বছরের ছেলেটি হঠাৎ
ছিঁড়ে ফেলেছে বইয়ের পাতা। শুধু ছিঁড়েই চলেছে এখন সে।
নদীর কাছ থেকে আলাদা করে নিল শাখানদী। একটি উর্বর
বদ্বীপ নদীর মোহনা থেকে সরিয়ে নিলো, তাকে পছন্দ মত জায়গায় বসাতে গিয়ে পাহাড় কাটতে
হলো। স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছে বালকটি।
একরাতে সে বদলে দিতে চায় সম্পূর্ণ ভূপ্রকৃতি। নদীগুলোতে জল আছে, এখানেই একটু ভয়।
গিরিখাতকে তার ভয় নেই, নদীকে ভয়। কিন্তু ভয় পেলে তো চলবে না, তাঁর
কাঁধে আসমুদ্র হিমাচল।
বিক্ষোভ হচ্ছে চারদিকে খুব। আশ্চর্য কেউ দম্ভ কিনতে
চাইছে না। সুবিধেমত দাম হোক তবুও লোক চেখে দেখুক। নদনদী, পাহাড় জঙ্গল বদলে ফেলা
কত সহজ। পরিকল্পনা মাত্র। তারপর অপেক্ষা। শুধু সমস্যা করছে সেই মূর্খ মানুষগুলো।
কিছু অবাধ্য মানুষ। এগুলোকে ধরে বেঁধে কোথাও রাখতে হবে। আলাদা করে। নদনদী পাহাড়
জঙ্গল শহর গ্রাম নদীবাহিত উপত্যাকা থেকে দূরে কোথাও। তারপর টুকরো টুকরো করে সব
ম্যানেজ করা যাবে।
যেখানে যত মানুষ এরকম অবাধ্যতা করবে তাদের শাস্তি
হবে। জেল হবে। বোমা হবে। খুন হবে। অর্থনৈতিক প্রতিরোধ। তবুও মানুষগুলো মানছে না।
তারা নদীর উপর শুয়ে পড়ছে। হাজারে হাজারে। খুব কষ্ট হচ্ছে অসমাপ্ত কাজগুলোকে সমাপ্ত
করতে। বালকটি উন্মাদ হয়ে গেলো হঠাৎ, চেঁচাতে লাগল, কিন্তু মনে হচ্ছে সারা দেশ জুড়ে
মানুষ বহুদিন ধরে চলে আসা অনেক হত্যার জন্য আজ শোক পালন করছে। কঠিন মৌনব্রত।
তারপর কী হবে? কী হবে বালকের?
ভারতের নদনদী চ্যাপ্টারটি পড়তে এসে রোজ কয়েক লক্ষ
ছেলেমেয়ে হঠাৎ বদলে যাচ্ছে। তারা বলছে আইন বদল হবে, বদলে যাবে ভারতের সব নিষ্ঠুর আইন।
অবিশ্বাস্য হলেও অন্য কয়েক কোটি মানুষ
ছোটদের কথা শুনে আবার বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, চরাচর বিষগ্রস্থ নীল হয়ে গেলেই
জন্ম নেয় অন্য কেউ... হতে পারে সে
স্বপ্ন অথবা নেতা অথবা দীর্ঘ মিছিল অথবা জনসভা অথবা স্পর্ধা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন