রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯

ইন্দ্রাণী সরকার




প্রসাদ বিতরণ 

মৃত মানুষদের খন্ডগুলো সেলাই করি রোজ 
ফের যদি জোড়া দিতে পারি 
ওদের কাটা ক্ষতস্থানে মধুর প্রলেপ দিই 

আমার ভালবাসা দিই 
আমার মনের মাধুরী দিই 
আমার গানের কলি দিই 

এক সময়ে দেখি তারা জীবিত হয়ে 
জীবনের গান গেয়ে উঠছে 

আমি  নিজেই নিজেকে সম্মান পদক দিই 
নিজের গৌরবে অভিষিক্ত হয়ে প্রসাদ বিতরণ করে খাই

আরব্য রজনী

চায়ের ভাঁড়ে চা খেতে খেতে হঠাৎ দেখি 
আমি নিজেই ভাঁড়ে পরিণত হয়েছি 
আমার চিরকালীন স্বভাব 
অভাবেও নষ্ট হয় না 
অত্যন্ত বিশুদ্ধ 

আমি দহনে 
আমি সবার মননে 
আমি লোকায়ত লোকজনে 
আমি উর্ধ, অধ, নৈঋত, বায়ু সব কোণে 
আমি সীমাহীন অশান্ত অবিচল আরব্য রজনী

প্রভাত ফেরি

প্রবাসীর শব ছুঁয়ে বসেছিলাম 
কবে তার পরিবার এসে কৃতকর্ম 
পালন করবে তার অপেক্ষায়।

ঘুম ভেঙে উঠে দেখি শব উধাও!
পরিবার এসে নিয়ে গেছে।

তৎপর আমাদের উঠোনে বাঁশি বাজল 
ময়ূর ময়ূরীর দল পেখম মেলে দিল 
আমাদের বাগান ফুলে ফলে শষ্যে ভরে গেল 

আলতো করে আলটুসি পাখির ডানায় স্বপ্ন এঁকে 
প্রভাত ফেরির আয়োজনে নৌকো ভাসালাম।

দানসত্র

যেন দানসত্র খুলেছে কেউ 
আচমন করে বৌ বরণ করে 
ঘরে পিঁড়ি পেতে আলতা 
পায়ে নূপুর বেঁধে নাচতে দিই

বঁধূয়া এ পরবাসে রবে কে ?
তোমার এলোচুলে কত গান 
কলতান আজো দিশাহারা 
আমি তোমারি পথে শায়িত

বিদ্রোহ ঘোষণা আর আলাপের 
শেষে নজরুল এক ঘুমন্ত পক্ষী 
মাঝে মাঝে আকাশ বাতাস চিরে 
দু এক ফোঁটা সুর ভেসে আসে

ছলছল চোখ প্রবাসী ছেড়ে তিনি 
আসামের চা বাগিচায় নত আছেন
নতুন সংসারে চাল, কলা, আলু 
গৃহিণীর রূপে মজে তাঁর স্বর্গবাস।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন