শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০১৯

তৈমুর খান




আমরা বিলম্ব সিরিজে আছি



আন্ডার গ্রাউন্ড


বিলম্ব আর একটি ভুল পেরিয়ে
আমরা সিদ্ধান্তের দিকে যাচ্ছি।
ধারণার বাইরে কিছু গলাবাজি
অথবা ধাপ্পাবাজির মুখ সামনে আসছে
নিহত আত্মাদের প্রতি কোনও অলৌকিক
সহানুভূতি বশত আমরা এক একবার
চুপচাপের পরামর্শ শুনতে শুনতে
গাছের ছায়ায় এসে দাঁড়াচ্ছি।

এই তো আমাদের লীলাক্ষেত্র —
চণ্ডী দাস, বড়ুচণ্ডী দাস, মাধব অথবা
দ্বিজমাধব কত সার্থক যুগের রাস্তা পড়ে আছে ।
রাস্তায় নবান্ন উৎসব, রাশ পূর্ণিমা, তীব্র অশ্বমেধ পর্ব।
ছন্নছাড়া থেকে আবোল তাবোল
ট্যাঁশ গরু পেরিয়ে গেল।

আমরা বিলম্ব সিরিজে আছি
আর ভুল পেরিয়ে সিদ্ধান্তের সেলুনের দিকে হাঁটছি
রাস্তা কতটুকু?
পাড়া ভরে যাচ্ছে আকাঙ্ক্ষার সেলুনে সেলুনে…


ফাস্ট ফ্লোর  


গল্প শেষ হবে না কখনও
তবু গল্পের কাছে যাই
হাত ধরি, সেই হাত
যে হাত প্রথম ছুঁয়েছে

তার ছোঁয়া লুকিয়ে রাখি
আমবন কাশফুল ময়ূরাক্ষী ব্রিজ
পার হয়ে অস্তগামী সূর্যের দিকে হাঁটছি
পাখিরা ফিরে আসছে সব
রোদের বাউল বাজাচ্ছে একতারা

আমাদের প্রথম কাঁপুনি থেকে প্রেমের জন্ম
তারপর গান এল
তখন নৌকা বেশ টলোমলো
দুলতে দুলতে কোথায় ভেসে গেলাম?

স্রোত শুধু, স্রোতে ভেসে যাওয়া
আবেগের ঢেউ ভেঙে ভেঙে
অচেনা স্বপ্নের দেশ


সেকেন্ড ফ্লোর


তীরে তখনও বিহ্বল দাঁড়িয়ে আছে
আর হাসছে কেবলই
ওর নাভিপদ্মে কোন্ বিশ্বাসের মায়া?
চেয়ে থাকি —
ব্যঞ্জনাহীন একটি জীবন যেন মৃত্যুকে জয় করে ফেরে
কথার ভেতরে ঢাকা পড়ে যায় আরও কত কথা
বলার ভেতরে না বলা কত
অভিমানে অভিমান ভিজে যায়

তবুও রঙিন ছাতার স্বপ্ন
পায়রাগুলি দানা খেতে আসে
আর সমস্ত দানায় সত্তার বীজ
ঘুমন্ত বীজপত্র জেগে ওঠে

পৃথিবীর সমস্ত শস্যক্ষেতে
আলো ও আঁধারে
জেগে ওঠে শিষ
সেসব শস্যমঞ্জরীর চিৎকার শুনি

নিজের কৃষক অভিলাষ
কোনও অলৌকিক নবান্নের দিকে হাঁটে
সরু গলা তুলে কলাপাতা রং
দারুণ কিশোরী উঁকি দেয়

নিশ্চেতনার প্রাচীর ভেঙে পড়া ঘর
চেয়ে থাকি সেদিকেই
কোনও অদৃশ্য কাকের ডাক
ভ্রমের সর্বস্ব ব্যাকরণ ভুলে যাই


থার্ড ফ্লোর


হৃদয় কি চিরদিন নিরক্ষর থাকে?
সমস্ত ক্লাসেই অনুত্তীর্ণ সংবাদ
কোথাও ভাষা নেই, ভাষারা কোথায় যায়?
গাছের ফাঁকে ফাঁকে আমরা রোদের ঝিলিকের
লুকোচুরি দেখি
আর বাঁশিতত্ত্ব বুঝতে বুঝতে
কোথাও ডানা মেলে উড়ে যায় রাধাগান

কে কার নকশা বোঝে?
শুধু দাগে দাগে বিন্যস্ত বেড়া
ঘুমের শরীর খুলে দেয় বিশ্রামে
নষ্ট কালের বারান্দায় কেউ কেউ ভৈরবী
কেউ কেউ ধুলোর পরাগে নতুন কৌশিকী
জল নেমে গেলে ক্ষত দেখা যায়
নদীও বিষাদ মাখে
বালিতে হারায় চিহ্ন কার?







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন