অবন্তিকা সিরিজ – ১
ব্লাড লিরিক
অবন্তিকা, তোর খোঁজে মাঝরাতে
বাড়ি সার্চ হল
এর মতো ওর মতো তার মতো কারো মতো নয়
যেন এমন যেন অমন যেন তেমন নয়
কী করেছি কবিতার জন্য আগ্নেয়গিরিতে নেমে!
একি, একি? কী
বেরোচ্ছে বাড়ি সার্চ করে
কবিতায়? বাবার কাচের আলমারি
ভেঙে ব্রোমাইড সেপিয়া খুকিরা
কবিতায়। হাতুড়ির বাড়ি মেরে মায়ের তোরঙ্গে ছিঁড়ে
বিয়ের সুগন্ধী বেনারসি কবিতায়। সিজার
লিস্টে শ্বাস নথি করা আছে
কবিতায়। কী বেরোলো? কী বেরোলো? দেখান দেখান
কবিতায়। ছি ছি ছি ছি, যুবতীর আধচাটা যুবা!
মরো তুমি মরো
কবিতায়। সমুদ্রের নীলগোছা ঢেউ চিরে হাড়মাস চেবাচ্ছে
হাঙর
কবিতায়। পাকানো ক্ষুদ্রান্ত্র খুলে এবি নেগেটিভ
সূর্য
কবিতায়। অস্হিরতা ধরে-রাখা পদচিহ্ণে দমবন্ধ গতি
কবিতায়। লকআপে পেচ্ছাপে ভাসছে কচি বেশ্যা-দেখা আলো
কবিতায়। বোলতার কাঁটাপায়ে সরিষা ফুলের বীর্যরেণু
কবিতায়। নুনে সাদা ফাটা মাঠে মেটেল ল্যাঙোটে ভুখা
চাষি
কবিতায়। লাশভূক শকুনের পচারক্ত কিংখাব গলার পালকে
কবিতায়। কুঁদুলে গুমোট ভিড়ে চটা-ওঠা ভ্যাপসা শতক
কবিতায়। হাড়িকাঠে ধী-সত্তার কালো-কালো মড়া চিৎকার
কবিতায়। মরো তুমি মরো তুমি মরো তুমি মরলে না কেন
কবিতায়। মুখে আগুন মুখে আগুন মুখে আগুন হোক
কবিতায়। মরো তুমি মরো তুমি মরো তুমি মরো তুমি মরো
কবিতায়। এর মতো ওর মতো তার মতো কারো মতো নয়
কবিতায়। যেন এমন যেন অমন যেন তেমন নয়
কবিতায়, অবন্তিকা, তোর খোঁজে সার্চ হল, তোকে নিয়ে কই গেল না তো!
আলফা ফিমেল বিড়ালিনী
ক্যাটওয়াকে শোস্টপার, শব্দহীন আলতো স্টিলেটো
ফেলে দেহের আলোয়
মেলে ধরছিস তুই বাঁকের বদলগুলো হাসির হদিস তুলে, ঠিক
যেন
ইমলিতলার তিনতলা থেকে বারবার ভাসাচ্ছিস দু’থাবার
তুলোট ম্যাজিক, অবন্তিকা, আলফা ফিমেল বিড়ালিনী, কোলে নিয়ে
আদর করিস যাকে তারই চরিত্র তোকে চেপে ধরে কালো শাদা
বাদামি ধূসর
নক্ষত্র-ক্লোনিং চোখে অর্গলছেঁড়া তোর লিভ-ইন কোনো
পৌরাণিক
ঋষির রেশমি ঠোঁটে দরোজাবর্জিত কিছু অ্যাগ্রেসিভ
আঁচড়-কামড়–
তুই কি নীলাভ দূরত্বে থাকা অরুন্ধতী? নাকি
তুই
হবির্ভু সন্নতি কলা অনসূয়া ক্ষমা শ্রদ্ধার কোঁকড়া ঘনান্ধকারে
দু’পাশে দর্শক নিয়ে ক্যাটওয়াকে হাঁটছিস
দেশ-কালহীন?
তাই তোকে বর্ণসংকর করা কতই সহজ দ্যাখ, আদুরে
অ-নাস্তিক
নিজেই নিজেকে চেটে অহরহ স্পিক অ্যান্ড স্প্যান থাকবার
যৌনতার নরম মডেল তোর আদি-মা বা পূর্বপুরুষ ছিল কিনা
কেউই জানে না দেখতে কীরকম গায়ের আদল কন্ঠস্বর
শ্বাসে তোর পাখির উড়াল-গান ইঁদুরের মৃত্যুমুখী-খেলা
মাছেদের ঘাই
অবন্তিকা, অধুনান্তিকা, তোকে সীমা দিয়ে বেঁধে ফেলা অসম্ভব;
কোন পুরুষ? কোন পুরুষ? কোন পুরুষ? কোন পুরুষ?
তৈমুর আত্তিলা-হুন ক্যালিগুলা পল-পট রোবেসপিয়ার? নাহ–
তোর প্রেম অনির্ণেয় তবু তুই ক্যাটওয়াকে গ্রীবা তুলে
আমাকে খুঁজিস…
পপির ফুল
বোঁটায় তোর গোলাপ রঙ অবন্তিকা
শরীরে তোর সবুজ ঢাকা অবন্তিকা
আঁচড় দিই আঠা বেরোয় অবন্তিকা
চাটতে দিস নেশায় পায় অবন্তিকা
টাটিয়ে যাস পেট খসাস অবন্তিকা।
পরমাপ্রকৃতি
মেঘের রং দিয়ে ছুঁয়ে দিস অবন্তিকা
চামড়া বাঘের ডোরা ধরে
হাওয়ার রেশম দিয়ে চুল আঁচড়ে দিস অবন্তিকা
মাথা বেয়ে ওঠে বুনো মহিষের শিং
ঝড়ের মস্তি দিয়ে পাউডার মাখিয়ে দিস অবন্তিকা
গায়ে ফোটে গোখরোর আঁশ
হরিণের নাচ দিয়ে কাতুকুতু দিস অবন্তিকা
ঈগলপাখির ডানা পাই
রোদের আঁশ দিয়ে নখ কেটে দিস অবন্তিকা
গজায় নেকড়ের থাবা হাতে পায়ে
নদীর ঢেউ দিয়ে চুমু খাস অবন্তিকা
কাঁধে পাই রাবণের জ্ঞানী-গুণী মাথা
বৃষ্টির ঝাপট দিয়ে জড়িয়ে ধরিস তুই অবন্তিকা
হুইস্কির বরফ হয়ে যাই
গানের সুর দিয়ে চান করিয়ে দিস অবন্তিকা
ডুবে যেতে থাকি চোরা ঘূর্ণির রসে।
অবন্তিকা, তোর ওই মহেঞ্জোদারোর
লিপি উদ্ধার
কী গণিত কী গণিত মাথা ঝাঁঝা করে তোকে দেখে
ঝুঁকে আছিস টেবিলের ওপরে আলফা গামা পাই ফাই
কস থিটা জেড মাইনাস এক্স ইনটু আর কিছু নাই
অনন্তে রয়েছে বটে ধূমকেতুর জলে তোর আলোময় মুখ
প্রতিবিম্ব ঠিকরে এসে ঝরে যাচ্ছে রকেটের ফুলঝুরি
জ্বেলে
কী জ্যামিতি কী জ্যামিতি ওরে ওরে ইউক্লিডিনি কবি
নিঃশ্বাসের ভাপ দিয়ে লিখছিস মঙ্গল থেকে অমঙ্গল
মোটেই আলাদা নয় কী রে বাবা ত্রিকোণমিতির জটিলতা
মারো গুলি প্রেম-ফেম, নাঃ, ফেমকে গুলি নয়, ওটার জন্যই
ঘামের ফসফরাস ওড়াচ্ছিস ব্রহ্মাণ্ড নিখিলে গুণ ভাগ যোগ
আর নিশ্ছিদ্র বিয়োগে প্রবলেম বলে কিছু নেই সবই সমাধান
জাস্ট তুমি পিক-আপ করে নাও কোন প্রবলেমটাকে
সবচেয়ে কঠিন আর সমস্যাতীত বলে মনে হয়, ব্যাস
ঝুঁকে পড়ো খোলা চুল লিপ্সটিকহীন হাসি কপালেতে ভাঁজ
গ্যাজেটের গর্ভ চিরে তুলে নিবি হরপ্পা-সিলের সেই
বার্তাখানা
হাজার বছর আগে তোর সে-পুরুষ প্রেমপত্র লিখে রেখে গেছে
মহেঞ্জোদারোর লিপি দিয়ে; এখন
উদ্ধার তোকে করতে হবেই
অবন্তিকা, পড় পড়, পড়ে বল ঠিক কী লিখেছিলুম তোকে–
অমরত্ব অমরত্ব! অবন্তিকা, বাদবাকি
সব কিছু ভুলে গিয়ে
আমার চিঠির বার্তা তাড়াতাড়ি উদ্ধার করে তুই আমাকে
জানাস
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন