চাঁদ সদাগর
এইখানে শুয়ে আছে রোদ,
বৃষ্টি ছিল কিছুক্ষণ আগে
যে পথের পাশে জলসত্র
ডেকে নিত আদরে সোহাগে।
এই পথে হেঁটে যায় ছায়া
অনাদরে পড়ে থাকা গান,
ধুলোর সংসার ভেঙে দেয়
হাতছানি দেয় চোরাটান।
সোপানের নিচে বসে থাকি,
ক্লান্ত চোখে স্বপ্ন রাতভর
কালীদহ চিরে উঠে আসে
ডুবে যাওয়া চৌদ্দ মধুকর।
ইনসমনিয়াক
পংক্তিমালা ৮
দেওয়ালে
বিমর্ষ মানচিত্র
এঁকেছে কদিন
জলো হাওয়া,
আর তার মধ্যে
ফুটে ওঠে
আমাদের দীর্ঘ
পথ চাওয়া।
এই রাত
নক্ষত্রের নয়
এ নয় গানের
দিন আর
এখন রাতেরা
জেগে থাকে
বুকে নিয়ে
স্তব্ধতার ভার।
সারাদিন যাকে
ছুঁয়ে থাকি
রাত হলে সেই
তো অধরা
এই নিদ্রাহীন
রাত শেষে
স্বপ্নে সে কি
এসে দেবে ধরা?
এই অবান্তর
বেঁচে থাকা
এই
পরিব্রাজনের পর
তুমি কি আমার
জন্যে আছো?
তুমি কি আমায়
দেবে ঘর?
শোক তাপহীন
অন্ধকার
রাস্তার মতো বয়ে যাচ্ছে
নদী, দূর থেকে ভেসে আসা গানের
সুর মিশে
যাচ্ছে ঢেউয়ের শব্দে
এমন নির্জনতার
কাছে সমর্পনের মুদ্রায়
দাঁড়িয়ে থাকাও
কিছু একটা পারা।
অগোছালো জমানো
কথা,
দলা করা কফের
মতো থুতু দিয়ে
ফেলে দিতেও
চাই কিছুটা সামর্থ্য।
সেটুকুও যাদের
জোটেনি,
তাদের জন্য
থাক মুর্দাঘরের হিমেল আলো
আর শোকতাপহীন
জমি সাড়ে তিন হাত।
আরোগ্য যাত্রা
কখনও সে বলেনি
তোমাকে
এভাবেই বয়ে
যায় রাত
আর তার অমোঘ
অসুখ
অমাবস্যার
দিকে ধায়।
যতিহীন এই
জেগে থাকা
মৃদু শব্দে
সচকিত চোখ
ভোরের আলোয়
শুয়ে পড়ে
দুঃস্বপ্নের
চাদর জড়িয়ে।
তার দিকে ধেয়ে
আসা স্তুতি
আর যত মুগ্ধ
চেয়ে থাকা
অনায়াসে তুচ্ছ
করে রোজ
আজও সে পথের
দিকে চায়।
অঃনিশেষ এই
অপেক্ষার
গল্প কেউ
লিখেও রাখে না
নিরুদ্দিষ্ট
শব্দগুলো শুধু
অন্ধকারে
গিয়েছে হারিয়ে।
শহরের উত্সবের
রাতে
তুমি তার
কণ্ঠলগ্না হলে
আরোগ্যের পথ
খুঁজে পেয়ে
সে যায়
অজ্ঞাতবাসে চলে।
গোপন স্তব
শুধু সে চেয়েছিল কোথাও অবসর
তৃষ্ণা দূর
করা বৃষ্টিজল
সময় পড়ে আছে
এখন অফুরানজ
আঁজলা ভরে ওঠে
শুধু গরল।
এই তো সন্ধ্যা, প্রদীপ জ্বলে ওঠে
এই তো মাঠ
থেকে ফেরে বাতাস
গূঢ় এ চক্রের
কোথায় শেষ হবে
পেরিয়ে সেও
যাবে দীর্ঘশ্বাস।
সেও তো
জেনেছিল এসব যাওয়া আসা
নিছক প্রথা আর
পুরনো পাপ
তবু সে
ভেবেছিল, আঁকড়ে খড়কুটো
উঠবে ভেসে
কিছু বাস্তুসাপ।
ছোবলে মিশকালো
আঁধার নেমে এলে
হাওয়াতে মিশে
যায় আর্তরব
অন্ধ কুয়াশায়
বেপথু শব্দেরা
যৌথ সুরে গায়
গোপন স্তব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন