তেমন কিছুই না!
তেমন কিছুই না! দেখাও এক অভ্যেস। সে এখন টেবিলের ওপর বসে, চেয়ারে বই রেখে,
পড়ছে। অথবা ঝিমোচ্ছে। জুতোকে মাথার বালিশ করেছে, আর
বালিশকে জুতো। ঘুম আসে
আর কই! দূর দিক চক্রবালে এখন রাত, পূর্ণিমা রাতের আকাশে
জ্যোৎস্নার মিহি রেণু
উড়ছে। কিন্তু হাইপোথিসিসে যেহেতু এটি দিন, তাই চোখে রোদ চশমাও।
তেমন কিছুই না! শিক্ষাও আবহমান, এবং অভ্যেস। সে বি কে এ বলছে, এ
কে বি।
ব্যাট লিখতে সে লিখলো এ বি এস। সামান্য আগুপিছু। একটু উলটে নেওয়াই তো!
সে কেবল মাস্টার থেকে এখন এগিয়ে যাবে প্রি প্রাইমারীর দিকে...
তেমন কিছুই না, সভ্যতাও একটা অভ্যেস। সামান্য পালটে নিলেই তা দিব্য অনেক
তেমন কিছুই না, সভ্যতাও একটা অভ্যেস। সামান্য পালটে নিলেই তা দিব্য অনেক
বদলানো। যেমন বিকল্পের কোনো পরিশ্রম নেই। যেমন সদা মিথ্যে
বলিবেক। তরবারি
কলমের থেকে শক্তিশালী। আপাতত সে ঘুমায়।
নদীতে জল বয়ে যায়। বাতাসে ঝাউ
পাতার গান। ওঠার পর কী হবে কে জানে!
সে মানে জ্যোতি। জ্যোতিকে মনে পড়ে? হেতমপুর প্রাইমারী স্কুলের ফর্সা সুন্দরী
সে মানে জ্যোতি। জ্যোতিকে মনে পড়ে? হেতমপুর প্রাইমারী স্কুলের ফর্সা সুন্দরী
কোঁকড়ানো চুল মেয়েটা! দিনটা ছিল ২১মার্চ। বসন্তের। উৎসবের। বসন্ত উৎসবের।
পরদিন দোল। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দাঁড়িয়ে ছিল কাল্টু। বহুবার
প্রোপোজাল
দিয়েছে। জ্যোতি তো জ্যোতিই। পাত্তা দেয়নি।
কাল্টুও প্রেমিক। তেমন কিছুই না। একলা
পথে আবীর মাখিয়ে দিলো জ্যোতিকে। তেমন কিছুই হয়নি!
হয় না! জ্যোতির মুখটা
কেবল পুড়ে গেছিল। এক চোখ নষ্ট। এক চোখ কুঁচকে ঝুলে। তেমন কিছুই নয়!
লোকজন বলেছিল, ও কেন একা পথে হাঁটলো! পরদিন দোল। তেমন কিছু হয়ওনি!
ক’দিন নার্সিংহোম ঘুরে জ্যোতি ফিরেছিল বাড়ি। আর ও বেঁচেই আছে।
সমাজও তো একটা স্ট্যান্ডার্ড! শিক্ষা, সভ্যতাও। সেগুলো যখন উল্টোপথেই চলে, তখন
নিজের বোধ অনুভূতি আদর্শ এগুলোকে উলটে দিলেই চলে, জ্যোতি
তাই...
তবে জানেন, যে কথা বলছিলাম! তেমন কিছুই হয়ও না আসলেই! ঘুমন্ত জ্যোতির
বুকের ওমে মুখ লাগিয়ে শুয়ে দু’বছরের শ্রীতমা। জ্যোতির সন্তান। শ্রীতমাকে ছুঁয়ে
জ্যোৎস্না ছুঁয়েছে দীপককে। সেই যখন খুব ক্যাও ক্যাঁচাল, থানা
কোর্ট, পুলিশ আর
মাথাধরা সারেই না! মেদিনীপুর কোর্টের জুনিয়র উকিল, দীপক, আরে যে ওর কেসটা
লড়ছিল, জ্যোতিকে বিয়ে করে বসলো!
তেমন কিছুই না! জ্যোতি নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে। কেবল ঘুমের মাঝে চমকে গিয়ে শ্রীতমাকে
আরও কাছে টানছে। হাজার হোক কন্যাসন্তান!
তেমন কিছু না বলেই চেয়ার চেয়ার হয়েই রয়ে গেল। টেবিলও টেবিল। বাইরে চাঁদ
ঢাকছে মেঘ। আবার কিছু পর উন্মুক্ত সেও। যেমন হয়!
তেমন কিছুই নয়ের সারাংশে দীর্ঘ কবিতা, একাধারে গল্পও। সাবলীল ভঙ্গীতে লেখা। বেশ লাগলো --
উত্তরমুছুনভালো লাগল। বস্তুত জ্যোতির জীবনের একটি সম্ভাবনা মাত্র, যা কিছুটা হলেও সুখের। আবার এও হতে পারত, জ্যোতির চোখের জ্যোতি নিভে যেতে পারত, পারত জীবনের জ্যোতি নিভে যেতেও। তাহলেও বিষয়টা কি তেমন কিছু হতো! না হতো না, হয় না। ফলে, 'তেমন কিছু নয়'। গ্রেট।
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগলো। তেমন কিছু নয় তাও অনেক কিছু। জ্যোতি দীপককে পেলো। পেলো কন্যা সন্তান। ফের কেঁপে ওঠা অজানা আশঙ্কায়; এও তেওন কিছু নয়। চলছে চলবে যেমন চেয়ার টেবিল রয়ে যায় জন আসে জন যায়- কত কী লেখা হয়! তাও তেমন কিছুই হয় না।
উত্তরমুছুনএই ধরনের লেখা , কবিতা , গল্প, না কবিতা, না গল্প, যাই হোক, এইধরনের কাজ আমাদের মত বিশেষ নাগরিক পাঠক গন চায়। আমরা চলমান সাহিত্য নিয়ে পড়তে পড়তে ভাবতে ভবে নতুন দিকে মুখ ফেরাতেই চাই।
উত্তরমুছুনচলমান ভাবনার সাহিত্য তাই বলে পুরনো হয়নি। কিন্তু
সাহিত্যের নতুন চলন দরকার।
এই জাতীয় কবি লেখক গন সেই আশা পূরন করতে পারেন। কবি ও প্রকাশক কে ধন্যবাদ।
Ridendick Mitro