ইরাবতীর আকাশ
ইরাবতী অপেক্ষা করে আকাশে ফেরার দিনটার জন্য।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরের সময়টুকু মায়ের মন ভাল থাকে।
মা বলল, সেই রাতে বেশ গরম, তুই খুব কাঁদছিলি। যেই সূর্য উঠল বললাম, ঐ যে ঐ আকাশে
আমাদের বাড়ি। সেখানেই সূর্যটা উঠছে।
সে জানে আকাশে প্রজাপতিরা থাকে। আর বাতাসের সাথে
প্রাণ ওলট পালট করে ওড়ে। হলুদ রঙটা তার পছন্দ নয়। সবুজ প্রজাপতিগুলো কেমন উড়ন্ত
পাতা সেজে ভেসে যায়!
দিনে কখনো পার্কের ভেতর খেলতে ঢুকলে প্রজাপতিদের সাথে
ছুটেই দিন কাটে তার। সকালে হাঁটতে আসা কেউ কেউ বলে, জানোয়ারের
বাচ্চাগুলো পার্কটাকে নোংরা করে ফেলছে।
সে ছোট্টবেলাটা দেখতে পায়। মায়ের আঙুল ছেড়ে হাঁটতে না
পারা সে টলমল পা ফেলে চলেছে সূর্যটাকে ধরবে বলে।
উদ্বাস্তুগুলোকে দেশ থেকে ভাগানো দরকার।
আর প্রজাপতির মতো উড়তে গিয়ে দু’হাত উঁচু করে উলঙ্গ সে
মাটিতে থেবড়ে পড়ে যায়।
যতসব বেজন্মার দল।
ইরাবতী শব্দগুলোর মানে জেনে গেছে। কষ্ট হলেও সে জানে
সব গল্পের একটা সুন্দর শেষ থাকে। সেই গোপন কথাটা গল্পের শুরুতে কেউ জানতে পারে না।
কিছু কষ্টের পরে শেষ হয় সেই আনন্দে। এই উঁচু উঁচু ইমারতের নীচে সে অপেক্ষায় থাকবে।
দিনে নোংরা পা হেঁটে যাবে ফুটপাথ দিয়ে আর রাতে কিছু হাত তার শরীর দিয়ে। ইরাবতী জানে একদিন আকাশ নেমে আসবে ফুটপাথের পলিথিন শিটের ওপর আর
শরীরের দু’পাশে দুটো ডানা। সেদিন সে সত্যি ঘরে ফিরতে পারবে। আর, সেদিন থেকে সারারাত সে আর মা শুয়ে থাকবে পাশাপাশি।
প্রজাপতিরা
তো উড়ে উড়েই ঘরে ফেরে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন