আলোয় আলোয় মুক্তি
এসব কথামালা মনে সাথী করে গাছটা পার হচ্ছি। আমার কানে আসতে
লাগল পাখিদের কাকলী। সেই পরিচিত! ক্রমে আরো স্পষ্ট! ঐ অত উঁচু দালানের সামনে আমি
ওপরে তাকাই। কী যেন খুঁজি...
মানুষের সাথেই মানুষের হয় না আর পাখিদের সাথে টেলিপ্যাথি! আমি
যখন যাই রোজ সকালে ওরাও বুঝি আমাকে লক্ষ্য করে...
আজ মেট্রো থেকে নেমে হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে কথা বলছিলাম পাখিগুলোর সাথে। দূর থেকেই জানি গাছটা খালি। বলছিলাম কাল অনেক ভোরে আসতে হবে, তোমাদের দেখব না। রবিবার এ পথে আসব না। সোমবারে এলেও জানিনা তোমরা থাকবে কি না। ভালো থেকো তোমরা।
পিল সরণি থেকে বেরিয়ে বোনাভেনচুর মেট্রোতে আসতে মিনিট
দশেক। পথের এক পাশে খোলা জায়গাটায় যেখানে বাচ্চারা সাইকেল চালায়,
এলেই অজান্তে চোখ যায় ওখানে অনেকগুলো মেপল গাছে। অনেক পাখি
ওখানে! কোন কোন সকালে পাখি না থাকলে মন খারাপ হয়ে যায়।
একটা খাঁচার ভেতর কয়েকটা পাখি। মাঝবয়সী লোকটা যথারীতি
বেঞ্চে বসা। মর্নিং ওয়াক করার সময় ওদেরকে বের করে আনে, তারপর এই দৃশ্য প্রতিদিন,
আমার ধারণা।
পাখিগুলো মনের আনন্দে কিচিরমিচির করে,
ওড়ে উল্টেপাল্টে খাঁচার ভেতর। এতটুকু আলোতে ভাবে মুক্তি
পেয়ে গেছে! বিভ্রম।
আমরাও একটু সুতো আলগা হলেই ভাবি মুক্তি। কে যে টান দিয়ে
রাখে কেউ জানে না।
ঈশ্বর মানুষ মন নাকি নিজেই! কিংবা সুরঞ্জনা কিংবা বনলতা
কিংবা মণিদীপা কিংবা কারেনিনা কিংবা লেডি চ্যাটার্লি কিংবা ওকাম্পো কিংবা নৃপবালা অথবা
অপু অথবা দীপ অথবা অভীক অথবা মেয়ারসল্ট অথবা সামসা অথবা কলিমুল্লাহ...
অথবা
হতে পারেন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। উইলিং সাসপেনশান অব
ডিসবিলিফে হয়ে যান তিনি মনের বাড়ির নায়িকা।
গল্পকার নিঃশব্দ...
গল্পকার বৈজ্ঞানিক। ফুল পাখি লতাপাতা মৎস্য মায় কাঁঠালের
অনুভূতি অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে নিয়ে গবেষণা করেন। ম্যাগনিফাইং গ্লাসে কখনো
বাদাম মোটকু, ফিলাডেলফিয়া
চিজের মতো মসৃণ রুমালি রুটি কখনো মুখে পুরলেই মিলিয়ে যায়,
৩৬-২৪-৩৬ কোকের বোতলের মতো সেক্সি হয়ে ওঠে কমলালেবু।
সূর্যের উদরে ভোর ঢুকে যায় অবদমিত আত্মরতির মতো।
এ ছবি সিস্টেম ঠিক করে দেয়। যা কোন দর্শক ভাবেনি কোনদিন। এমন
ছায়াছবিটা সম্ভব?
এর জন্য অস্কারও যোগ্য পুরস্কার নয়। কোটি কোটি চোখের জল। বিস্ময়। আত্মা নিংড়ে প্রার্থনারত। এ ছায়াছবিটা যেন ট্রাজেডি না হয়ে যায়...
সবাই এখানে প্রধান চরিত্র। এখানে অসুর আছে। তাকে সুরে
গাওয়াতে বাধ্য করে। কমিক রিলিফ দেয়। আশ্চর্য প্রদীপ্ত সব ডায়লগ। মুখস্থ নয়,
তাতক্ষণিক। মাথা হেঁট হয়ে যায় হীরক রাজার দেশের
ক্ষমতাধরের। লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে আসে। রক্ত বুকে রুখে দাঁড়ায়।
মনে হচ্ছে বায়োস্কোপে আটকে আছে
চোখ বা রূপালি পর্দায়। কোন চিত্রনাট্য নেই। লোকেশন বাছাইয়ের ঝামেলা নেই।
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুন