বারুদ
(১)
কত আক্ষেপ ভাঙচুর করে আমাকে! আচমকা ঘুম ভেঙে গেলে
দারুচিনির গন্ধ। শরীর তো নয় যেন বহুমুখী চুল্লি। তখন বাদামগাছের কথা মনে করে
একুরিয়াম ভর্তি করে রাখি ঢোঁড়াসাপ।
তোমার হাতে কি একটিও আকাশ নেই কিংবা উল্কা গতির কিছু
শব্দ?
ক্রিয়াপদ
শূন্য বৃষ্টিবাগান। সেও পূর্বজন্মের অন্তঃসারশূন্যতা। এ শহরে বাঘ নয়, দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে কুকুরের উপদ্রব।
(২)
এমন ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুর!
অথচ
সমান্তরাল কোন পথ নেই তোমার কাছে যাবার। ঘুরপথে গেলে প্রপিতামহ। মুনিঋষি। আমি
একজনকেও চিনি না। আহারের বিনিময়ে অন্য কোনো প্রয়োজনের কথা যারা বলে তারা কোনও সজ্জন ব্যক্তি নয়। এমন
রৌদ্রদিনে বাঘের গল্প শুনতে বেশ লাগে।
(৩)
চুপিচুপি
লুকালে কামিনী বনে! এই ভঙ্গিমা আমার পরিচিত। রুপোর সিঁড়ি। ধাপে ধাপে ফেলে যাচ্ছ
পদচ্ছায়া। আর একটু পেছনে আটপৌরে আলোচনা। যতই লুকাও স্ফুলিঙ্গ জ্বলছে পার্বত্য
অঞ্চল। জেলখানায় বন্দী যোদ্ধাদল।
তারাও জানে এ দৃষ্টি! বিলাইছড়ি মাঠ। ইস্পাতনির্মিত হৃদয়। হরিণ মাংসের চপ। এই গন্ধে
জেগে থাকে মাছ। মীনপাখি, এমনভাবে তাকিয়ে আছ ঘামের দিকে যেন
মুক্তা। এসব মদ, সোনার টুকরো রেখে কারা ঘুমায়! তুমি কবি।
মৃত্যুর দিকে মুখ রেখে তোমার যাবতীয় ঘুম। অন্ধকার উস্কে রেখে জ্বলে সন্ধ্যাপাথর।
ধর্মতলা থেকে ঘুরে গেলে অথচ দুধ চায়ের সাথে অসমাপ্ত গল্পের কোন সুন্দর সুরাহা হল
না।
(৪)
অণু, একদিন অন্ধকারে তোমার ছায়া নিয়ে
পালিয়ে যাব সংসার থেকে
তখন ছুঁয়ে দেখ না বয়স। ভোরের কাছে বল না, প্রতারক।
ফল ছাড়াও বৃক্ষের থাকে পাতা। শেকড়। ফুল -- আমি কোনো সবুজ নেব না।
ধর্মান্তরিত ফলগুলির ভেতর জমছে কুয়াশা। দেখ, ইহুদি পাখিরা আকাশটাকে দখল করে নিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমে। কাবাঘর ঘিরে আছে
কালপুরুষ।
এই
সব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা সত্ত্বেও এক একদিন মাংস পরোটার খিদে
জাগিয়ে রাখে সারারাত।
(৫)
এক একদিন অতিরিক্ত অন্ধকার। চাপচাপ রক্ত। ইচ্ছে হয়
কাউকে প্রশ্ন করি, আর কতদূর গেলে রাজপথ?
এই পথ সহজ নয়। তোমাকে ভুলে থাকা কঠিন। রাত্রির
পথচারীদের সঙ্গে চলছে দেবতা। কখন কোন ফাঁক গলে দেবতা ঘুমিয়ে গেলে আমার আঙুল ঘেঁষে
চিতার আগুন জ্বলে। এই আগুনের ভেতর কে যেন অগোচরে রেখে যায়, বারুদের গোলা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন