শনিবার, ৩ মার্চ, ২০১৮

ইন্দ্রাণী সরকার




স্বর্ণপ্রভা


তুমি কী সুন্দর হেলেঞ্চা লতার মত দুলে ওঠো
আকাশে ছড়িয়ে পড়ে তোমার স্বর্ণপ্রভা
দেখে দেখে ভাবি তুমি কি সেই যাকে দেখে
ইন্দ্রদেবতার হাজার চোখ ফুটে উঠেছিল
বিশ্বামিত্রের তপস্যা ভঙ্গ হয়েছিল
চতুর্দিকে দেবতারা বাজিয়েছিল শঙ্খনিনাদ
তোমায় পাদ্য-অর্ঘ্য দিতে নত হয়েছিল হিমালয়
ময়ূর ভুলেছিল পেখম মেলতে ?
তোমার দিব্য দর্শনে বিনা বাক্যালাপে
শুধুমাত্র চোখের দর্শনেই সব ইচ্ছে পূরণ হয়



প্রিয় বন্ধুকে


নিঃস্তব্ধ পথের পাশে দেখি তাঁর অশ্রুর জলছাপ
দু: যখন সমাগত, তাঁর নীরবতা অস্থির করেছে
বাড়ির ধারে ফলবতী গাছগুলোয় তাঁর পরিচর্যার
মায়াময় হস্তরেখার আদল মনকে সান্তনায় ভরায়
সোনালী দিনগুলিতে যখন আলো অপূর্ব ঝলকায়
তখনি শুনি তাঁর মৃদু পায়ের আলাপনের মূৰ্চ্ছনা
তাঁর শুচিস্মিত হাসি উপচে ওঠে প্রতিটি কোণায়
রংবাহারী পাখিরা হেসে হেসে কথাই বলে যায়
তাঁর আসার দেরি নেই শুভদিন সমাগত বুঝি এই



বালিকা যুবক


বাইরে অপূর্ব আধভাঙা জোছনা
গাছের পাতায় পাতায় শিরশিরানি
নদীতে ঢেউয়ের কলকল
বাইরে তাকিয়ে দেখি নয়নাভিরাম দৃশ্য
ঘাসের উপর এক সুপ্রতিম যুবকের কোলে
ঘুমায় উদ্ভিন্নযৌবনা এক বালিকা
পাপড়ি ঠোঁটদুটি অর্ধউন্মীলিত
পেলব কুসুম শরীর, মুক্তাখচিত হাসি
পাশ ফিরে বড় মমতায় বালিকা
জড়িয়ে আছে যুবকের দেহ
যুবকটি আর বালিকার হাত পরস্পরে আবদ্ধ
দুজনের চোখে একরাশ স্বপ্নরাশি
যা ঈশ্বর ওদের চোখে ঢেলে দিয়েছেন
দুজোড়া গোলাপি ঠোঁট আবেগে সিক্ত
বালিকার উন্মুক্ত কেশরাশি ছুঁয়ে থাকে যুবকের বুক
ঈশ্বরও অবাক হয়ে দেখেন এই অভূতপূর্ব মিলনদৃশ্য



গল্পকথা


সমুদ্রের ঢেউয়ের ওপর দিয়ে
সে যেন হেঁটে হেঁটে আসে
হাওয়ায় তার চুল এলোমেলো
মেঘলা আকাশ তার সাথে
লুকোচুরি খেলে যায়
কখনো আলো কখনো ছায়া
তার সারা শরীরে লুটোপুটি করে
অনেক দূর থেকে যে পাহাড়ি সুর
শোনা যায় তা তারই ছেলেবেলার গান
আকাশপরীরা উড়তে উড়তে এক নজরে
তাকে দেখে ফিসফিস করে বলে,
দেখো দেখো কী সুন্দর একটা এঞ্জেল
তারা ডানা ঝেড়ে সব রংটুকু
তার গায়ে ছড়িয়ে আকাশে মিলিয়ে যায়
একরাশ বালিহাঁস জলের ধারে উড়ে উড়ে
নিজেদের মনে গল্পকথা শোনায়।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন