শনিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৮

তাপসকিরণ রায়


ধর্ষণ মোমবাতি

বাগানে একটা আপেল লটকে ছিল
আপেলী আলোর নিশানায়, তুমি পাঁয়তারা মেরে হোক
সেখানে জল ঢেলেছিলে আর কিছু হাওয়ার মিশ্রণে  
ঠিক তক্ষুনি আর একটা প্রদোষ মিত্র জন্ম নিলো।
সেও কবিতা লেখে ঘষা কাঁচের চশমা নিয়ে
কখনও ডাঁট ভাঙা চশমায় তার সুতো বাঁধা ছিল--
সেও একটা মেয়ের ধর্ষণ নিয়ে কাড়ি কাড়ি কবিতা লিখেছিল
সে সব কবিতা ভাসছিল আকাশে, বাতাসে,
সমুদ্র ঢেউয়ে ঢেউয়ে যে ফসফরাস জ্বলে ওঠে
তার থেকে মনে পড়ে যায় মোম বাতির কথা,
সে জ্বেলে নিলো তার দু-হাতের তালুতে
বুকের মাঝে, কানের ফাঁকে, শরীরের তাবৎ তাবৎ খালি স্থানে।


বীজ

কাঁচ খুলে শেষ দেখা হয় না।
অথচ শেষ শব্দের উপমা তখন খুঁজছিল সে
একটা মানুষের পাশে একটা মানুষ কি ভাবে জুড়ে যায় !
আর জুড়ে থাকা মানুষগুলি কি ভাবে ভেঙে ভেঙে ক্ৰমশঃ ক্ৰমশঃ
আগ্নেয়পাত ভূকম্প নাচিয়ে যাচ্ছে-- প্রদোষ মিত্র ওঠো ওঠো
এখনো তুমি মরনি, তুমি মাটির জঠরে, এখনও  বীজ হয়ে,
মাটির গর্ভে  
এখনও  সে রসায়ন ধরে নেই….

সৃষ্টি

সে কাজ তোমাদের নয়--তোমাদের আড়ালে ঘটে যাচ্ছে সহস্র সৃষ্টি।
অন্ধকারের বিধাতা ধরে নিচ্ছে চাঁদ সূর্য তারা, তারপর কখন যে তার মৈথুন বেরিয়ে আসছে আর বেরিয়ে আসছে  চুপে চুপে তার যন্ত্র থেকে
ঘোলা মাটি, ঘোলা রক্ত, তাল তাল মণ্ড সেজেছে সন্তর্পণে, তুমি তা জান না।
কুমোর টুলিতে দেখো আর এক প্রদোষ মিত্র লন্ঠনের আলোয় তাঁর চাঁদ,
চাঁদপানা  মুখ সাজিয়ে সাজিয়ে

তাসমহল

একদিন দেখে কেউ নেই, সেই মুখ, সেই চাঁদ, বিস্তৃত মাঠ ভেসে গেছে, বিসর্জনের জল নেই, আগুন নেই, তপন নেই, পুষ্পহীন, ব্রক্ষ্মনাদহীন,
তোমরা দেখ উড়ে যাচ্ছ, উড়ে যাচ্ছে ওই বৃদ্ধ...ওই অনাথ কবির মহল তাস হয়ে উড়ে যাচ্ছে। সমস্ত বিছানার তুলো উড়ে যাচ্ছে উড়ে যাচ্ছে শিমুলের তুলো ঝরা বীজ, বাকলের মাঝে সেও জানে সেখান থেকে উড়ে গিয়ে সে সমস্ত আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে তারপর আবার শায়িত বালিশ আর তোষকে ঘুমাবে শিশু, বৃদ্ধ, আর সেই প্রদোষ মিত্র।     


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন