শনিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৮

উমা মন্ডল


লাঙলের ইতিকথা...


(১)

আজকাল মৃত্যুর পাশ দিয়ে হাঁটে
ইহজন্মের পা
চোখে চোখ পড়লেও মাথা নীচু করে নেওয়া।
একটি গোলকার চক্রের বিন্দু মনে হয় নিজেকে
ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে সূর্যাস্তের আলো সীমান্ত ঘেঁষে।
এখনো সময় আসেনি
হাতে কড় গুনে আকাশের দিকে তাকায়।
উড়ন্ত চিলের ডাক মনে করিয়ে দেয়
গতরাত্রির পূর্বপুরুষের আগমন,
তার কথোপকথনের শব্দ
বিভাজন, বিন্যাস।
গামছায় মুছে নেয় ঘামজলের দাগ
তার আজন্ম নিঃশ্বাস।
ওঠাপড়ার রেখাচিহ্নগুলি
এমনিই মৃতপ্রায় ঝুড়ির মতো ,
খসে যাবে লিখিত সময়ে। বাড়তি
শব্দের প্রয়োজন হবে না...

(২)

মুঠোয় ভর্তি বীজের দানায় ভাতের গন্ধ লোভী করে তোলে খিদেয় কাতর
তারাদুটিকে।
সাদা নরম শরীরের স্বাদ্
জিভের গোড়ায় স্রোত তোলে,
হেমন্তের মাটিতে গড়িয়ে নিতে নিতে
পথ ভুলে যায় বেজন্মা ইচ্ছাগুলি।
ছিবড়ে পাতায় শুধুই খরার শিকড়,
এঁকেবেঁকে তুলে আানে দেনা-পাওনার বংশগত চরিতামৃত।
সুর ভেসে যায় খাদের নির্জনতায়...

(৩)

বাউল-ফকিরের উঠে আসা কোনো নিঃস্ব
জলজ শব্দের মধ্যে দিয়েই
মাটির গান নাকি খিদের কষ্ট বোঝে!
একতারা এগিয়ে দেয়...
মেঠো সুরের কান্না ভেসে বেড়ায় তালকানা ডিঙির মতো পূর্ব কোণে,
আজ সূর্য নিদ্রা গিয়েছেন
ভোর দেখবে না পৃথিবী।
লাঙলের ফলায় শুকিয়ে যাওয়া রস
তার কালচে রঙ,
জানতে চায় নি কেউ পরিচয়।
আজকাল সার্চিং'এই উত্তরের অভিধান খুঁজে পাওয়া যায়,
কোনো শব্দ যদিও বা মুছে যায়
নতুন জন্মের এডিটিং'এ সময় লাগে না।

আরও উঁচুতে কোমল ধৈবত বেজে যায়
স্কেলের মাত্রায় 'ন্যাচারাল-সি',

একতারার গমকে ছায়া হয়ে যায় লাঙলের ইতিহাস... 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন