শনিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৮

ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত


অলস পঙক্তিমালা

প্রতিটি দাঙ্গার পরে ভাবি
এই মূর্খ জনতা আমার দেশ নয়
ঐ বোমা হাতে মানুষকে আমি চিনি না
আমি কি পাগল হয়ে যাবো
এত বিষ উড়ে বেড়ায় চারিদিকে
কে ওড়ায় এত শত ছাই

নিজেকে ধিক্কার দিয়ে ভাবি
আমি কিছু বুঝি না শিখি না
শেখাতে পারিনি কোনো উন্মুক্ত তরবারিকে

লাল লাল আগুন আর রক্তধারা
বয়ে যায় আমার ব্যর্থতা হয়ে
আমাদের ব্যর্থতা হয়ে

ধিক ধিক কবিতার অলস পঙক্তিমালা

অমৃতবাহিনী

অনিবার্যতায় পথ গিয়েছে বেঁকে,
ফেরা যায় না;
অনেকটা এগিয়ে দেখেছি এই বাঁক।
এখানে প্রান্তরে ঈশ্বর অশ্রুক্ষেপ করেন
অমৃতবাহিনী নদীতে।

ঈশ্বর ব্যথিত বারংবার,
তাঁর কান্না দেখি আমি অকালবর্ষণে-
মাঠ ভেসে যায়, ফসল ভেসে যায়
ধারাজল প্লাবনে।
অথচ ভারতের আহ্বান ছিল
হানাহানি ব্যতীত এক সভ্যতার;
কবির কলম তাই থামায় দুর্বৃত্ত,
সুফির নলি কাটে ঘাতক ছুরিকা;
অথচ অখণ্ড ভারতবর্ষ এক আহ্বান ছিল
হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলার।

টেক্সাসে ভেঙ্গেছে মিথ

কুয়াশার সকাল এক আজ টেক্সাসে ভেঙ্গেছে ভোরের মিথ
ঝকঝকে সকালের রোদটোদ কিছু নেই, কেবল ঝিঁঝিঁপোকা
মাথার ভেতরে আর ঝিরিঝিরি ঝরে পড়ে আকাশের ঝরঝর।
এখন সকাল কি? না সন্ধ্যাবেলা - ঘুম ভেঙ্গে উঠে এরকম
ভাবি, ঘুমটুম কিছু নয় বিভ্রান্তির শেষ নাম, ঘুম ভেঙ্গে এরকম
ভাবি।

কাল সারারাত টিভি চলেছিল, ঘরেতে হিন্দি সিনেমা আর বাইরে
অ্যামেরিকা; বাইরে চড়চড় চড়া রোদ - ঘরেতে মাছ ভাজা
ফোড়নের ঝোল - এহেন বৈপরীত্য ঘটে বাঙালি সমাজে;
ভাড়া দেওয়া চার্চের ঘর - বাইরে যিশুর ছবি ক্রস টস-
ভেতরে পুজো হোম, আধুনিক গাড়ি থেকে নেমে আসে শাড়িপরা
নারী।

সমুদ্রে নামিনি বহুদিন- যদিও অনেকবার গেছি সাগর সাক্ষাতে,
পায়ের কাছে ভেঙ্গেছে ঢেউ, ডুবেছে পায়ের পাতা, অবগাহনে ভাসিনি;
আজকাল বড় বেশি হাঁপিয়ে উঠি থ্যাঙ্কিউ আর ওয়েলকামে,
ভেসে যেতে চাইছি নির্ভেজাল বাঙালি মেলায় পাঁপরভাজা রথের রশি;
অথবা পহেলা বৈশাখ মেলায় যাইরে।

ফুলগুলো   

ফুলগুলো সব তেমন আছে
যেমন তুমি সাজিয়েছিলে,
তোমার বাড়ি তোমার ঘর তোমার গেরস্থালি
আগলে রেখে আগলে রেখে
ঝড় বাদলে আগলে রেখে
বৃষ্টিপাতে শুষ্ক রেখে
এবার আমি ক্লান্তি মেখে-
যেতে চাইছি সুদূর দূরে।

ফুলগুলো সব তেমন আছে
যেমন তুমি সাজিয়েছিলে,
ঝরে পড়েনি পাপড়িগুলো,
হয়ত কিছু শুকিয়ে গেছে।










কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন