সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০১৭

বিতস্তা ঘোষাল

উৎসারিত আলো

অন্ধকারে ঘরের কোণে লুকিয়েছিলাম চুপটি করে
হাতে  শিকল, চোখে গান্ধারীর কালো ওড়না
খানিক বাদেই চিতায় তুলবে, আমি সতী হব, দেবীও
আফিং-এর নেশায় ঘোর, কপাল জুড়ে সিঁদুর
পায়ে আলতা - আমি সতী, আমি লক্ষ্মী
পড়াশোনা শিখিনি, পুঁথির সাথে জন্ম থেকেই বিরোধ
আমি ভাগ্যবতী, আমি সতী, আমি পুন্যাত্মা

আগুনের তাপে ঝলসে শেষ হবার আগে
তুমি ধরালে স্লেট, কাঁপা হাতের ফাঁকে গুঁজেদিলে পেন্সিল
তখনো  দ্বিধাগ্রস্ত, সমাজচ্যুত হব এবার
কলঙ্কিনী কূলটা কিম্বা নরকগামী,
আমার ভীষণ ভয়-

তুমি শেখালে অ অজগর আসছে তেড়ে
আমটি আমি খাব পেড়ে -- সেই আম যা আমার নয়
আমি তো আজন্ম শিখেছি ঘেরাটোপের আড়ালেই
নীল অতল-

তুমি ডাক দিলে বর্ণপরিচয়ের,  
তুমি বললে আমার শিক্ষা ছাড়া পৃথিবী অচল
তুমিই বললে কোনো স্বাধীনতাই আসবে না আমি স্বাধীন না হলে

খুলল বন্ধ দরজা
জ্যোৎস্নায় ভিজে গেল শত শতাব্দীর
জীর্ণ বিছানা

জঠরের নিভৃত অন্ধকার থেকে
এখন উৎসারিত আলো...


আবহমান

চল আজ কোনো কাজ করব না, বলে  চলে গেলি ভরা ভাদরে, তখন দুপুর। তারপর প্লাবন সারা শহরে,
ভেসে যায় জীবনভেসে যায় যৌবন, আনাড়ি মাঝি ছেড়ে দেয় হাল...  

সেটা ছিল আমার অক্ষর শেখার আগের কথা... এখন কবিতা লিখি কম্পিউটারে... বই পড়ি অনলাইনে...  

এখনো বৃষ্টি এলে শহর ভাসে... এখনো দুপুর আসে নিয়ম করে...  

শুধু অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় না

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন