রোমন্থন পর্ব (১)
কাঁঠালবন পেরিয়ে
দীর্ঘ সরষে ক্ষেতের আল ধরে
ক্রমেই ঢুকে যেতাম গভীর শালবনে।
যে সবুজ পাখিটির পিছু নিতাম দলবল নিয়ে
আজ তার পাখনাও নেই।
জীর্ণ শিয়াল ঘাপটি মেরে গেল।
হয়তো ও আমাকে চিনেছে; কারণ
ওকে বিরক্ত করেছি অনেক।
একবার বের হয়ে আয়
তোকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে চাই।
তালগাছটা আছে কিন্তু বৈলডোব জলশূন্য
শরতের দুপুরে তালগাছের নিচে দাঁড়িয়ে
আমরা কুশার খেতাম।
আর ঝাঁপিয়ে পড়তাম বৈলডোবের ঘোলাজলে।
ফেরার পথে মাছমারার বানাগুলো ভেঙ্গে
প্রচন্ড বেগে দৌড়াতাম তখন পায়ের তলায়
সরষেক্ষেতের আল থাকত না।
থাকত সরষেক্ষেত।
রোমন্থন পর্ব (২)
ধানকাটার কর্মময় রাতে
যেদিন আগুন হারিয়ে গেল
কাশবনের ধারে দাঁড়িয়ে-
সহসা আঁৎকে উঠি
পেকে যাওয়া হলুদ কচুপাতা দেখে।
পেঁচা ডাকে।
মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যায়
রাতের শঙ্খচিল
শাদা কুয়াশা ভেদ করে
পড়ে থাকে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত।
নগেনের নেহাই-এ
হাতুড়ির ঘা পড়ে একটানা
বিকট শব্দে ঘোর ভেঙ্গে যায়।
পৌষরাতে শিরশিরে বাতাস
পূর্বের প্রান্ত থেকে ভেসে আসে
বাঁশির আর্তনাদ।
রাতের ধানকাটা শেষ হলে
বেজে ওঠে নাড়াদের বিদ্রোহসংগীত
দূরপ্রান্তে তখন
শান্তি অন্ধকার নামে
মানুষের চোখে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন