মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

রিমি দে

পাথর
 
দূর থেকে মুখ দেখতে পাওয়া যায় না। কাছে গেলে মুখ লুকিয়ে রাখে। হেমন্ত।
পাথর কুড়োয়। হাঁটু মুড়ে বসে, কখনো উবু হয়ে। নির্দিষ্ট কয়েকটি অঞ্চলে
ওকে দেখা যায়। তবে রেললাইনের ধারগুলোই বেশি পছন্দ সম্ভবত। মেঘ আসে, ও থাকে। বৃষ্টি এলে নিজেকে আড়াল করে কোথায়, কেউ জানে না। ওর মুখে কি পোড়া দাগ? কিংবা সাদা? কেউ কি অ্যাসিড ছুঁড়েছিল!

শীত এলে গায়ে বস্তা চেপে দেয়। হেমন্ত। জানালার ধারে বসে বসে হাজার হাজার প্রশ্নে বিদ্ধ হতে থাকে সবুজ।
সবুজ এক রাতে হেমন্তর কাছে চলে যায়। গিয়ে দেখে ও পাথর কুড়োতে কুড়োতে নিজে পাথরের মূর্তি হয়ে গেছে! সবুজ গভীর অন্ধকারে টর্চের আলোয় হেমন্তর গোটা পাথরের শরীরে হাত বোলায়। সে ছেলে না মেয়ে বুঝে উঠতে পারে না মুখ কেন যে সে সবাইকে দেখাত না, সে প্রশ্নও অধরা থেকে গেল

পাশ দিয়ে দ্রুতবেগে চলে যাওয়া রেলগাড়ির আলোয়ও সবুজ ধরতে পারল না

আসলে হেমন্ত কে! অস্থিরতার ঠান্ডা হাওয়া সবুজকে বুঝিয়ে দিল হেমন্ত ঋতুর কথা। ঘুম ভাঙ্গে। পুজো শেষ। হাল্কা শিশির মেঠো বারান্দায়। জানালার ধারে বসে টের পায়। মাথার ভিতর পাথরের মূর্তি ভেসে ওঠে। একটি ধারণা হেমন্ত নিয়েবেঁচে থাকার খোরাক। সবুজের। বারবার হেমন্ত নিয়ে পুনর্বার যার দেহ কঠিন বর্মে আবৃত। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন