রক্তচাপজনিত ১
বিবস্ত্র
বিবস্ত্র ঘরের
জালে পড়ে গেছে আলো
হিসেব নেই বলে
কাটাকুটি খেলি খুব
অগ্রবিন্দু থেকে
নেমে পড়ে দ্বৈতবাসনায় ঢুকি
ওরা হৃৎপিণ্ড
শুঁকে শুঁকে
আমায় খুঁজে বার
করার চেষ্টা করে,
ভাবি, যদি পাগল
হয়ে যাই
তার আগে নিভৃতে
হিসেব মেলানোই চাই!
অপর্যাপ্ত রাতে
ফড়িং বছর আর ভীমরুল মাসের কথা ভাবি
এসব কাটাকুটির পর
সৌন্দর্য্য,
শিক্ষা, প্রেমিক, স্বামী অথবা সব ফেঁসে গিয়ে
যদি এককে কবিতা
রাখি
ওরা আমাকে
মজাপুকুরে পাগল বলে
ডুবিয়ে দেবে না
তো!
যখন না না বলে
প্রেম ঢুকে গেছিল
পাকস্থলীতে
প্রেমিকের মুখ
থেকে নাটকীয় যবনিকার
পতন দেখার একটা
অঙ্কদৃশ্যও
আমি ভুলতে পারলাম
না!
দেখলাম, জলস্রোতে
ভাসছে নীহারিকা
হাতে পায়ে
শৈবালদাম
আস্তে আস্তে
শুকিয়ে যাচ্ছে ভাবরস
এ অনিয়ত গতি এখন
রুদ্রকে অক্ষ হিসাবে চাইছে
অথচ ব্যাঁকা
অক্ষে এলোমেলো ভার
এখানে দর্শন
লোপাট হয়
জিভের নূপুর
সঞ্চালনে
গলায় ফাঁস দেওয়ার
আগে
আমাকে পাগলাগারদে
দেওয়া হোক
ফিরে আসলে আমার
জিভে মাপা হোক
পাপ ও মানদণ্ডের
মূল্য
ঘড়ির কাঁটার পথ এ
অজস্র সংলাপ
কখনও কবিতা নয় -
কবিতার মতো কিছু
ওরা সম্মীলিত
প্রাণমীমাংসায়
আমার দর্পণ থেকে
খেয়ে নেয় আলো
গল্পের মতো শৈশব
নিয়ে
ফাঁকা, কাঁপা
ঠোঁটে
প্রেমের মধ্যে
ইকিরমিকির জন্মাতে দিই
দেখি, গোটা জীবন
যুদ্ধপ্রান্তর হয়ে
পলকে পলকে খুলে
দিচ্ছে বন্দুক
আমার যান্ত্রিক
প্রেম
অযান্ত্রিক
প্রেমের কাছে হেরে গেল-
এখন এ দীর্ঘ পাকা
চুলের মতো ছায়াপথে
ভারসাম্য তালি
মারে
ও ত্বরণ আমি
তোমার মন্দন খাব
দেখো, প্রকৃতির
বীজ থেকে
আতঙ্কিত হয়ে আমি
মেঝেতে শুয়েছি একা
সোফায় উলটে
ফেলেছি উপমাকে
আর স্বীকারোক্তির
সামনে টাঙিয়েছি আয়না-
নিজেকে অজস্র চড়
মেরে বলেছি
স্বীকারোক্তি - স্বীকারোক্তি
- স্বীকারোক্তি
চাওয়া আর না
চাওয়ার মাঝে
উচ্চারিত শব্দ
এখন থাক
প্রতিদিন
দ্রাঘিমায় চিতাস্বপ্ন দেখি পিতৃত্বের
দাউদাউ করে জ্বলে
রক্তপ্রবাল
অঙ্গার বানান
ভাগ্যে কপাল ভয়ের মাঠ
এ মাঠে চড়াব না
কাউকে
না মানুষ না
পুরুষ!
এখানে লবডঙ্কা
হয়েছে যারা
তাদের নেশাতুর
জিভের লালসা দেখে
আমি আধো আধো
নামতা বলব
নামতার মধ্যে
থাকবে অজস্র ভুল
ভুলের প্রত্যেকটা
কোষে জাদুমন্ত্রের মুদ্রা
উল্লম্ব ভাবে
দেখে নেব
নিঃস্ব হয়েছি বলে
পাপস্বপ্নে
ঈশ্বরের ঘরে উঁকি মারি!
ভ্রান্ত হয়েছি
বলে
পুণ্যস্বপ্নে
ঈশ্বরের খুন করি!
দু’হাতের রেখা
পরিবর্তনকালে
চুরি হওয়া
শতাব্দীর শপথ নিয়ে বলি
ধ্যান – ধ্যান -
ধ্যান
এই দ্বিনেত্র
দৃষ্টির মতো ধ্যানে
আকাংক্ষার কারণ
পাইনি খুঁজে
এখানে ঘুমের আগে
স্নায়ুকে বরফজল দিই
আর বিছানাকে
স্তোক-
ধ্বংসরা সৃষ্টিকে
ভালোবাসে বলে
দু’জনে বিপ্রতীপে
এসে স্খলিত হয়ে গেছে-
রক্তচাপজনিত ২
মানসিক
(উৎসর্গ – বিনয়
মজুমদার)
অশ্বরেখার বাইরে
তৈরি হোক সে বাগান
যে বাগানের মধ্যে
বিষ খাওয়ানো হবে আমায়
সুপাত্রে, মধুমাফিক-
আততায়ীদের
দু’পাশে বসিয়ে,
জন্মের মিহিন
গল্প বলা হবে
বিদ্যুৎ-এর ঝলকের
পর
নৃত্যপটীয়সী তার
মুদ্রা খুঁজে পাবে
এসো, আমরা মেঘের
হই
এসো, আমরা আকাশকে
বলি
দেহ থেকে ফুল
ঝরিয়ে দিতে
সমুদ্রমাফিক আমরা
অর্কিড উৎসব করব।
মন বোঝার আগেই
আমরা
পৃথিবীর
উন্মাদদের কপালে চুমু খাব
-অজস্র চুমু
চুমু খেতে খেতে
দু’গালে ভরাব সোঁদাগন্ধ
এখানে কষ্টরা
পর্বে পর্বে খুলবে হিমেল গাথা
এসো, আমরা মরালীর
মতো হেসে
মনের মধ্যে
ঢুকিয়ে দিই পরাগ আর ঋতুর রং
যে ঘুমের বাইরে
কম্পাস বৃত্তকে স্পর্শক রহস্যে ছুঁয়েছে
তাতেই ছুঁয়ে দিই
জাদুকাঠি শিল্প
এসো, আমরা
নৃত্যপটীয়সী হয়ে
কুঁজোর গায়ে গা
রাখি
ল্যাম্পের আলোকে
চাঁদের বীক্ষা শেখাই
ভিক্ষার দিন শেষ
হলে গেটের বাইরে ঝুলিয়ে দিই
‘অঘ্রাণের অনুভূতিমালা’
কুকুরের
সঙ্গমকালে আমরা কৃষ্ণচূড়াকে ভুলে গিয়েছিলাম
আর নিষিদ্ধপল্লীর
গল্প শুনতাম
অথচ একক প্রেম
এখানেও বাৎসল্য বানায়
প্রকৃত কৃষ্ণের
একটাই রাধা হয়
গোপিনীরা কোনো
নাম নয় বিষাদ যবনিকার বন্ধনী মাত্র!
এখানে মানুষ
নিষিদ্ধ বলে দেবতা ও পশুরা আসেন
পশুরা ভ্রষ্ট বলে
দেবতারা সুড়সুড়ি দেন
এখানে তৃপ্তিতে শান্তি
চাইলে
মৃত্যুর আশেপাশে
ঘুরো,
মৃত্যু তোমায়
মুক্তির রহস্য নিয়ে
সন্ধিতে দোল দেবে
শুধু
বিষও মধুর বলে
আমরা জিভকে ঠকিয়ে
ঘোরেতে ঘুমিয়েছি
কত!
প্রাণ হারানোর পর
খুলে গেছে চামড়ার
জ্ঞান...
শ্বাসরোধী
উত্তরমুছুনবিশ্বাসরোধী
ঘোরতর প্রতিরোধী।
- সাঁঝবাতি