শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

নাজনীন খলিল

গুপ্তধানুকী এবং মাংসবিক্রেতা 


সারারাত মুঠোর ভেতরে জোনাকির আলো নিয়ে বসে থাকি
ভোর হলেই তারা সব মৃতদেহ;
হাওয়ায় উড়ছে দীপাধারের শব

মানুষ টের পায় ঠিক
আর মৃত্যুর গন্ধ যত বেশি কাছাকাছি হয়;
তীব্র ধাবিত হয় জীবনের দিকে

এবং নিজের অজান্তেই মৃত্যুবাসরের জন্য তৈরি করে এক
অনিন্দ্য ফুলের বাগান

এখনো জীবন্ত ফেনার চিহ্ন লেগে আছে মৃত ঘোড়াদের নালে,
পিঠে এখনো বাঁধা আরোহীর স্যাডল
পালিয়ে গেল যেসব ঘোড়সওয়ার
তাদের প্রাণহীন অশ্বগুলোকে পরিত্যক্ত ফেলে
তারা জানত না প্রতিটি ঘোড়সওয়ারকেই হতে হয় দক্ষ তীরন্দাজ?
তারা কেন অস্ত্রহীন গিয়েছে
সেই জঙ্গলের পথে
যেখানে ওৎঁ পেতে আছে গুপ্তধানুকী এবং মাংসবিক্রেতারা?

  

আগুনের পাখি : ফিনিক্স

ভস্মস্তুপ থেকে আবার এসেছে উঠে, অবিনশ্বর আগুনের পাখি; ফিনিক্স

প্রতিবন্ধী এক ঈশ্বরকে যূপকাষ্ঠে বলি দেবার পরে
যারা ন্ন্যাসীর বাঘছাল দিয়ে বানিয়ে নিয়েছিল ট্রাম্পেট  
আর সেই প্রচন্ড ঢাকের শব্দ ছড়িয়ে দিয়েছিল বাতাসের পরতে পরতে
তারাও কি পথ ভুলে নেমে গেল কালো এক অন্ধকার গুহার দিকে?
ভুল করে বন্ধ গুহার ঘুলঘুলি খুলে গেলে
অবাঞ্চিত রোদ
রবাহুত শব্দের হৈচৈ ওঠে
বন্ধ গুহাই নিরাপদ বন্ধই থাক

যুগে যুগে মানুষ কেবল শুনেছে
আগুন উগরে দেওয়া পাহাড়ের কথা
লারারিয়ায় এখনো অঙ্কিত আছে ভিসুভিয়াসের সাপ

তীব্র হুইসেলের শব্দে দুলে ওঠে জলসাঘরের ঝাড়বাতি;
অস্থির আলোর রেখাপথ ধরে আত্মবিনাশকামী পতঙ্গ ওড়ে

অগ্নিরহস্যসন্ধানী পতঙ্গেরা
বারবার সে রহস্য জানতে  চেয়েছে
কী এমন ক্ষোভে ভলকানোর আচমকা এমন তীব্র ফোঁসে ওঠা!

অবশেষে
সমস্ত জমাট বরফ গলে গেলে দেখা গেল
রক্তমাংস নয় - রঙিন পোশাকেমোড়া ঙ্কা  


জানালার পাশে ছাইবর্ণ মেঘ
ঈশানকোণের বার্তা নিয়ে আসে-
ছায়াপথ ধরে আবার আসবে ফিরে কফিনবন্ধী ঘুঙুরগুলো;
যারা এখনো খোলেনি নাচের পোশাক,
ভোলেনি কত্থকের তেরে কেটে মুদ্রার বোল
একে একে ফিরবে সব নাচঘরের বেলোয়ারী আলোর বাসরে
আবারও
অদ্ভুত জোনাকীর আলো থেকে আসবে উঠে সেই নৃত্যপটীয়সী ময়ূরগুলো
যারা অবারিত জলনৃত্যের শ্রান্তিতে ঙিনপালক ঝরিয়ে দিয়ে
উড়ে গিয়েছিল অচেনা মেঘপথের উজান সন্ধানে

আবারও নতুন আঁচড়ে আঁচড়ে বিক্ষত হবে সোনালি ডানার রেখাচিত্রগুলো;
পালকে জলের ভার অসহ হয়ে গেলে
আবারও জন্মান্তরের পথে ফিরে যাওয়া?


২টি মন্তব্য: