শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

কাজী জহিরুল ইসলাম

ভুল

আমিও একবার পৃথিবী দেখবার, চোখ
শিশুরা ছুটে যায় কী দারুণ ছুটছে
ছুটতে ছুটতেই ওরাও সহসাই, রোদ
পাখিদের ডানাতে, চঞ্চু ও ছানাতে
কে যেন মেখে দেয় শূন্যতার রঙ
গোটানো ডানাটিতে সময় হানা দিতে
হঠাৎই গড়িয়ে গড়িয়ে নেমে যায়
জলজ সন্ধ্যা।

অন্ধকারে কি, কে করে কি রেকি
জমিনে কোন বীজ রুয়ে কে দিয়ে যায়?

যেখানে নেমে যাই, ক্লান্তি- ঘেমে যাই
একটু থেমে যাই...
কি সে লক্ষ্যের পথকে ঢেকে দিই?  
পথেরই আঁড়ালে
কিছু কি হারালে?
থমকে দাঁড়ালেই কে যেন তাড়া দেয়।

আমিও একবার পৃথিবী দেখবার, চোখ
ভুলেই বাড়ালাম না হয় এ দুটি পা
হয়েছে কিছু ভুল! হোক।


দিদজেরিদু

ভিয়েনার স্তিফেনপ্লাতসে এ কোন রাজত্ব আদিবাসী শব্দের
পাথরে বিছিয়ে দেহকোন গুহামানবী বাজাও প্রাণ, বাজাও দিদজেরিদু
স্তিফেনপ্লাতস বেজে ওঠে, বাজে শোনব্রুন সভ্যতা
উঠে দাঁড়ালে কেন হে নারী আমাকে দেখে, হে শিল্পী
হে শ্বেতাঙ্গ ছুতমার্গ ভগ্নি, তাসমান জলের স্পন্দিত প্রিয়তমা, মারিনা,
আমাকে ভাসিয়ে দাও শব্দের তরঙ্গে
তোমার কি মনে নেই
আজ থেকে বহু শতাব্দী আগে
আমরা দু’জন মিলে জন্ম দিয়েছি একাগজ-সভ্যতা
ইথার ও বিজলীর কাছে পরাজিত আজ পাথর ও জল, বেদুইন-বর্শা
আমাদের মাছগুলো এখন সুশি, সুগন্ধ ছড়ায় কাচের টেবিলে
আমাদের পাতাগুলো ওদের স্বাস্থকর ভেজমিল
তুমি আজ উদ্বাস্তু সগৃহে, কেউ বলে সাঁওতাল, কেউ মাওরি, আবার কেউ
আমিশ, মায়ানস কত কত নাম আমাদের
উন্মূল বলে আঙুল তোলে নপুংসক সভ্যতা
বাজাও দিদজেরিদু মারিনা
বাজাও দিদজেরেদু ফুলমণি মুরমু
শানিত তরবারির মতো সুউচ্চে তুলে ধরো এই নিরহংকার অস্ত্রখানি
এটাই তোমাদের প্রতিবাদের একমাত্র অস্ত্র
আজ তোমাদের মুখগুলো দিদজেরিদু
তোমাদের হাতগুলো, তোমাদের পাগুলো, তোমাদের ছিপছিপে দেহখানি আজ সরব দিদজেরিদু

শব্দের আঘাতে ভেঙে দাও এই অসভ্য দেয়াল
দিদজেরিদুর অধঃশব্দ প্রকান্ড মহাকম্পন তুলে বিদীর্ণ করবেই আকাশের মেঘ।

মারিনা, হে প্রিয়তমা, আরও জোরে ফুঁ দাও,
এত জোরে যে তোমার কন্ঠ ফেটে ডাহুকীর মতো বেরিয়ে আসুক সৃজনশীল রক্ত




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন