শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল

গৃহপালিত

একরোখা মেঘের নিচে ঘাস কাটছে ষাট বছরের বৃদ্ধ
তার এক পা জলে আর এক পা ডাঙায়, কোমর বাঁকা 
যন্ত্রণায় কালো জলে আকাশের নীল আভাস, জলের
কাঁপন আর কলমিলতার শরীরের উত্তাপ নিয়ে দা'য়ের 
দাঁতে কাটা যাচ্ছে অবসর, ছোট ছোট ঢেউগুলি গোড়ালি 
বেয়ে উঠে যায় আলপথে; কোথায় গিয়েছে এ পথ -
গৃহপালিত সুখের জন্য কচুরিপানা ভাসতে ভাসতে
বাতাস হয়ে যায় - 
জেগে ওঠে প্রতি দিন রাতের প্রচণ্ড গুমোট।
        

পাথর ও জ্যোৎস্নারাত
সমস্ত ব্যর্থতা নিয়ে পাথর স্পর্শ করলাম
বিশাল ঝাঁকুনি মেরে পাথর গলে অন্তঃশীলা
অহল্যার ভিতর ঘনমেঘ, আত্মকথায় কামরূপ
কয়েক শতাব্দির পুরাণ পল্লব
আমার পিতামহের কাছে রাধার কথা শুনেছি
সেই প্রথম পরিচয়ের নদী বইতে শুরু করে
হাঁটতে হাঁটতে গীতবিতান রাখি বিছানার পাশে
মেরুদণ্ডের কাহিনীগুলি ঘাসের মতো সবুজপ্রাণময়
অতঃপর শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রবেশ করি
দাবানল আপ্লুত জঙ্গলের জ্যোৎস্নারাতে —

বিষাদ ও জলছাপ

রোদভর্তি শিরীষ গাছের নিচে দীর্ঘ ছায়া 
নৃত্যরত সুখে জলের কাঁপন, হাসে মুক্তি মণ্ডল 
গ্রাম দুপুরের গন্ধে উজ্জ্বল বিষাদ ও জলছাপ
একা একা কথা বলি যেন
নিজের সাথে কথা বলার নাম প্রার্থনা 
ছায়া ও ছোঁয়ার নির্মল দিব্যতায় গড়িয়ে যায়
স্নানের মেঘ, জন্ম নেয় মালতি পাতায় ছড়ানো
বাতাসের দোলন আর পলাশ শূন্য মানুষ
আমাদের আত্মারা ভাসতে ভাসতে গায়ে মাখে
মহাশূন্য আর বকুল ফুল -


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন