শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

রুণা বন্দ্যোপাধ্যায়

সফরান্তরের গল্প

()

মুখফেরানো বসন্তে দুপুরবিলাস কুহু
কবর থেকে তুলে আনছে
মৃত কোয়েলিয়া

শেষসন্ধ্যার পালকে আঙুলভোলা সম্পর্ক
শববাহকের শরীর থেকে
খুলে নিচ্ছে অক্সিমিত শেকল

নিশিডাকা প্রহরে পুড়ছে দহন
অনন্ত প্রহরায় নিমঝিম অস্তিত্ব
রূপান্তরের গল্প বলে অ্যালজোলামের ঘোরে


()

দিনরাত্রির গল্প
গল্পের গায়ে নস্ট্যালজিক সিগন্যাল
লালসবুজ তুরুপের তাস
কোনটা কখন জ্বলে ওঠে
কন্ট্রোল প্যানেলে যেমন
যন্ত্র এবং যন্ত্রণা

খননের অশ্বক্ষুরধ্বনি
বারুদ ভরছে বিরহবাটে
চিহ্ন খুঁজছে বিচ্যুতির ঘরবেঘর
শতরঞ্জে ঘোড়ার দাগ
আড়াই পায়ের বিভ্রম
নৌকো তো নেই
গজগমন
কিস্তিবিহীন বিভঙ্গে

শীতলপাটি আতুর হলে
খোলাহাসির হাট
হাটুরের পিঠে পা ঝোলানো অনন্ত
ঝুলন্ত শূন্যের আঙুল ধরে
হাঁটছে আবার

()

তেহাই থেকে ঘুরে দাঁড়াতেই লোনাজল
একূল
ওকূল
দরিয়াও চমকে উঠছে নিদারুণ দুর্বিপাকে

ঝিনুকের কোলভাঙা মুক্তো
কারুকার্যে বুনছিল পাখির স্থাপত্য
রঙে
    ও
বেরঙে
তাদেরই দুএকটা নীললোহিত দুঃখ
উড়ে আসে হাতের পাতায়
আলো
      থেকে
অন্ধকারে
অপাপবিদ্ধ অশ্রু হাসে অভিমানী ঠোঁটে
শ্রুতিসঙ্গমে দুলে ওঠে অনিকেতের ঘরদোর

আঙুলে জড়ানো শূন্যতাগুলো
ছড়িয়ে দিই নিশ্চুপ জলতরঙ্গে
তুহিন রাতের গা বেয়ে
সুরে
    ও
বেসুরে
লোনাজলে ধুয়ে যায় শূন্যের অগভীর স্তর
আয়ত রাতের নাভিমূলে জেগে ওঠে
চিরায়ত সন্ধ্যার মুখ

()

বিশাখাপালেম খনন করছে
আত্মগোপন বৃত্ত
পরিধি বাজায় বৈরাগবাঁশী
অভিমানী ধুন নীরব নিঝুম
শীতনিষিক্ত রাত

উর্দিফ্রেমে রণক্লান্ত দিন
অনামিকায় আত্মহনন নিশি
মনকেমনের জানালা উড়ছে
দুএকটা পাখিও
কোন ঠিকানা এই পালকের ঠিকঠিকানা

শূন্যেও কিছু দাঁড়িকমা দিও প্লিজ
দুঃসাহসের পাঁজরে যেমন রতি এবং বিরতি

বিশাখাবিরহে শূন্যাঙ্কের চিরকুট
খুলে দেখি অঙ্ক তো নয়
একলা ভাসার নৌকো

ছেঁড়াপালে আঁকা বিষাদচিহ্ন
মুছে মুছে চলে নীলিমা রঙ্গ
তামসপাত্রে চোয়ানো মদ
সাদাবিভ্রমে অমোঘ শাসন

তবু বসে আছি ত্রিভুজসংকলনে
টুকে রাখছি হৃৎনগরের টুকিটাকি
হৃদিগ্রাফের তরঙ্গদৈর্ঘ্য বাড়ন্ত হলে
মোনিয়ামহারা ডো রে মি  

ভাঙা গলুই দেখছে দহনগহন
আঙুলে তার জলসওয়া জল
পূর্ব পরাগ অন্ত রঙ্গ
হারানো হৃদয়পুর
আমিও থাকি নেইঠিকানায়
কথায় না হোক

সংলাপে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন