উৎসব
উৎসবের পাশে বঙ্কিম হয়ে থাকা নর্দমাটি গলির বুক চিরে তাকায়। কখনো
ভাবলেশহীন, কখনো বা অহংকার জড়ানো। আলুথালু। ভোর থেকে সেখানে চলে গোটা এলাকার আবর্জনা। আবরণ উন্মোচন করে
নিজেকে আড়াল করে দাঁড়িয়ে থাকা বর্জন। সারাদিন।
সন্ধের মুখে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা কালো রুখোসুখো চুলের মেয়েটি অর্ধশায়িত। কালো শুকিয়ে যাওয়া গোলাপ ঝরাতে থাকে সারা শরীর থেকে।
বাদামী ঘাসের ওপর মেয়েটি যেন একটি কালো
বক্ররেখা। পেটের কাছে পুঁটুলি করা হলদে পচে যাওয়া খাবারের ঘ্রাণ।
একটি গাছ হয়ে নির্মলা খানিক স্থির দাঁড়িয়ে। বর্জনের পাশে। পরনের পেঁয়াজি লেহেঙ্গা মাটিতে
লুটোপুটি। মেয়েটি কোনোক্রমে বসে, মৃদু হাসে। ওকে জিজ্ঞেস করতে চায় নির্মলা প্রচুর। মেয়েটির কালোমাখা চোখদুটো গভীর। ক্ষত গড়িয়ে পড়ে পেঁয়াজি লেহেঙ্গা বেয়ে। দুহাত বাড়িয়ে দেয়। কালো বক্ররেখাটি সরলরেখায় রূপ নেয়। দাঁতে দাঁত চেপে বসে।
- নে, বোন আমার! আয় আমার সাথে, আলো দেব প্রচুর। নে নে!
কালো গোলাপটির পাপড়িগুলো কাঠের মতো শক্ত হয়ে যায়। বিড়বিড় করে অবোধ্য কিছু বলতে থাকে।
কিছু শোনা যায় না।
সমস্ত বর্জন তখন নীরব। যেন কিছুতেই কিছু এসে যায় না। কোনো আলো, কোনো ভালো আর কালোকে ছুঁতে পারে না। কালো গোলাপটি কখনো সরল
কখনো বক্ররেখা হয়ে আকাশের আয়না হয়ে যায়। জ্যোৎস্না ঘনিয়ে আসতে থাকে উৎসবের বিস্তার হয়ে। বিগলিত হতে
থাকে কালো গোলাপেরা। বর্জনগুলো আলোকিত হয়ে ওঠে সত্যি
সত্যি!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন