ফেসবুক প্রেম
ফেসবুকে করতে করতে এক সুন্দরী মেয়ের ছবিতে চোখ
আটকে যায় অমিতাভ’র। মায়াভরা একটা মুখ। নজর কাড়ার মতো। মেয়েটার হরিণকালো চোখ দু’টোর দিকে তাকালেই
ভালোবাসতে ইচ্ছে করে। প্রোফাইল সার্চ করে। নাম ছাড়া আর কোনো তথ্য নেই। নাম তমালিকা।
ফেসবুকে দুটো আইডি আছে অমিতাভ’র। একটা রিয়েল আর একটা ফেক। ফেক আইডি থেকে তমালিকাকে একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দেয় অমিতাভ। মজার ব্যাপার, সাথে সাথে
একসেপ্টও হয়ে যায়।
এরপর থেকে যথারীতি চলতে থাকে
চ্যাটিং। তমালিকার ইনবক্সে মনের
যত আনন্দ-বেদনার কথা তুলে ধরে অমিতাভ। তমালিকাও তার সব সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করতে থাকে অমিতাভ’র সাথে। আর এভাবেই চলতে থাকে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস। অমিতাভ অনেকবার তমালিকার সাথে দেখা করতে চেয়েছে। কিন্তু তমালিকা রাজি হয়নি, ফোন নাম্বারও দেয়নি।
তমালিকা জানায় তার এখনও বিয়ে হয়নি। আসলে বিয়ে করার মতো কোনো পাত্রই নাকি জুটছে না। অমিতাভও নিজেকে অবিবাহিত বলেই জানায় তমালিকাকে। এবং এভাবেই
চ্যাট করতে করতে দুজনের মধ্যে একটা আত্মিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে।
ফেসবুক বন্ধুত্বের দু’বছর পূর্ণ হবে আগামীকাল। আর এই দু’বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে
অমিতাভ আর তমালিকা একটা অদ্ভুত
পরিকল্পনা করে। কাল ওরা একে অপরকে বিয়ে করে ওদের ফেসবুক
বন্ধুত্বের দু’বছর পূর্তিকে অন্য মাত্রা দেবে। আর তাই কাল বিকেল ঠিক চারটেয় ওরা দুজন মগবাজার কাজি অফিসে মিলিত হবে।
পরদিন অফিস থেকে বেরিয়ে ঠিক বিকেল চারটেয়
মগবাজার কাজি অফিসে হাজির হয় অমিতাভ। তখনও তমালিকা এসে পৌঁছোয়নি। রিসেপশন রুমে অপেক্ষা করতে থাকে। অপেক্ষা করতে
করতে একসময় সোফার ওপর তন্দ্রায়
এলিয়ে পড়ে। তমালিকা আসে ঘন্টাখানেক পর। কিন্তু অমিতাভ এমনভাবে সোফায় এলিয়েছিল, তার মুখটা দেখা যাচ্ছিল না। অস্থিরতা ও উত্তেজনায় তমালিকা অমিতাভকে
খেয়ালও করে না। পাশের একটি সোফায় বসে
অপেক্ষা করতে থাকে।
কিছুক্ষণ পরে আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠে অমিতাভ পাশের সোফায় তার বৌ শান্তিলতাকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে ওঠে। বলে, তুমি এখানে কেন? শান্তিলতাও কম ভিরমি খায় না! বলে, আমারও তো একই প্রশ্ন, তুমিই বা এখানে কেন?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন