বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬

শর্মিষ্ঠা ঘোষ

দেরী   

এই যে বিমোহিত চক্করে পড়ে যাও
ছিটকে ছিটকে আসে দূরগামী চাকার পাথর
উড়ন্ত ধূলোকে হাত নেড়ে চুপচাপ ঘরে এসে বসি
পুড়ে যায় আঙুল ফুসফুস
আদেখেলে বিষাদ নিয়নের গায়ে, হোর্ডিংএ হিমজ্বর
অশ্লীল মশকরা ব্যানারের দেবতার চোখে
কাচে ফোটে কয়েকটা বাইফোকাল অক্ষর 
শিশুটির ঘুমন্ত ওঠাপড়া ছুঁয়ে দেখে মায়া
ঘন হলে সরে যায় আদর হরিণ
কেউ কেউ কেন এত দেরী করে ফেরে?
   

                  
লোকটা

লোকটা সকাল বিকেল হাসে বলে কেমন আছে কেউ জিজ্ঞেস করি না
নিজেই যেন নিজের ভালো থাকার বিজ্ঞাপন করে লোকটা  
ওকে ঈর্ষা করি নকল করার চেষ্টাও
ওর মতো ঝুরো বৃষ্টিতে একলা একলা হাঁটি
রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাতে তুলে নি কড়াপাক ভাঁড়ের চা
রাস্তার কুকুরকে বিস্কুট খাওয়াই, ইচ্ছে হলে কেক
টুকটাক ফুল কিনি অকারণ মাঝেসাঝে মিষ্টি বা চকোলেট
ভিখিরিকে পছন্দ হলে দশ টাকার নোট
লাইন হোটেলের শিশুশ্রমিককে টিপস আর সোয়েটার  
দুপুরের রাস্তায় দু’এক কদম নিরুদ্দেশ
ক্রিজ ছাড়া জামাকাপড়, হাতে বুদ্ধিদীপ্ত ম্যাগাজিন
চারমিনার থেকে উত্তর পুনরাধুনিক, প্রাগৈতিহাসিক চলভাষ
দন্ত বিকশিত বিজ্ঞাপিত হই ট্রাম বাস মেট্রোর চেনাজানায়
তারপরও কিছুতেই লোকটার মতো পেরে উঠি না  
কিছুতেই একা হলে হেসে উঠতে পারি না নিজের আয়নায়




ভীমরুল

একটু জমাই রাতের উষ্ণ শীস
পালক আমার ভেজা এবং ভারী
হঠযোগের কয়েকটা ইঙ্গিত
মৌনমৃত অপরাজিতার নীলে  
জ্বলা নেভার মধ্যবর্তী দাবী
শ্যামের আগে কুলের পরে বসে
নেই ভাবনার ভারবাহী খচ্চর
মরছে বেদম স্বখাত ভুলের তলে
প্রোভোকেটিভ ঢিল ছুঁড়ো না বস
ভ্রুপল্লবে লুকোনো ভীমরুল
কামড়ায় না এসব খালি মিথ
চোখ টিপলেই রাবণচিতা জ্বলে  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন