ওয়ান ইসটু
ওয়ান
আমিও ভাবছিলাম এই
ফোনটা এলো বুঝি এবার। আসলে নিজেরও ফোন করতে খুব ইচ্ছে করছিল।
এটাই ভাবছিলে?
কেন তুমি
ভাবনি?
আমি তোমাকে ভাবছিলাম।
ওটা তো নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলা হলো। একতরফা... সেখানে প্রত্যুত্তর তো কিছু নেই।
আমি কোনো প্রত্যুত্তর আশাই করি না। কোনো অভাব বোধ নেই।
আমি করি। এই যেমন কিছুক্ষণ আগে নিজের টেবিলটা গোছাচ্ছিলাম, অনেক পুরনো কাগজ জমে গেছে, কয়েকটা ছিঁড়েও
গেছে... কী লেখা আছে পড়া যায় না, সব সরিয়ে একটু গোছগাছ করার চেষ্টা করছিলাম, একটা
ছোট কাগজে অল্প কিছু লেখা চোখে পড়ল...
তুমি লিখেছ?
যেদিন লিখেছি সেদিন একটা কিছু তুমি আমাকে বলেছিলে, এটা তারই রিপারকেশন। লেখা সত্যি কি? যেটা
তুমি ভাবছ? না যেটা আমি ভাবছি? না কি যেটা আমরা ভাবছি? ...কাগজটা প্রায় ছিঁড়েই
গেছে।
একটা ইউপিন করো ।
কী?
ইউপিন! ইউপিন! রাজ্যের পুরনো বাতিল কাগজ গেঁথে রাখা থাকে, অফিস ঘরের দরজার
পেছনে দেওয়ালে ঝুলত, আগে...
এটা এত পুরনো যে ফেলে দিলেও হয়। যাক গে, বল।
কী বলব?
যা ভাবছ।
ভাবছি কোনটা বলব? যেটা মাথায় ঘুরছে সেটা, না যেটা চোখে দেখছি, না কি অনুভূতিতে
যেটা ফুটে আছে... এগুলোকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবে?
সাইকোলজিকালি না লিটারেল?
যা হোক কিছু।
কমিউনিকেশন করতে চাইছ। কিন্তু পারছ না। একটা একটা করে বল।
হ্হ! আসলে মাথার মধ্যে ঘোড়া ঘুরছে, কাল রাতে একটা স্বপ্ন দেখেছি আর
অনুভূতিতে তুমি।
ঘোড়া?
হ্যাঁ। ঘোড়া। হর্স।
বইয়ে আছে ঘোড়াদের চোখে চশমা পরিয়ে দিলেও ওরা ঠিক স্বপ্ন দেখতে পারে। ঐযে কী একটা ঘোড়াদের চোখে
লাগিয়ে দেওয়া হয় না! দৌড়ানোর সময় যাতে আইবলটা সবদিকে চলে না যায়।
ঠুলি! ঠুলি!
য়েস! ঠুলি। কাল লাইব্রেরি গিয়ে ঘোড়ার ওপর লেখা বই খুঁজলাম কত, বললাম না? মাথায় তাই এখন শুধু ঘোড়াই
ঘুরছে অথচ স্বপ্নে দেখলাম, ... নাঃ স্বপ্নটা বলা যায় না। স্বপ্নে কিন্তু ঘোড়া নেই।
কী হলো? দরজা খোলার শব্দ পাওয়া গেল? কেউ এলো?
না। আমি বেরোলাম। সেই নটা থেকে টেবিলে বসেছি, একটু বাইরে না গেলে..., আজ
বিকেলে কী করবে?
আমাকে ঘরে রেখে নিজে বাইরে যাচ্ছ? আজ বিকেলে আমি মন দিয়ে টিভি দেখব।
ওক্কে। বাইকের পেছনের সীটটা আজ তাহলে খালিই থাক।
থাক। আজ আমার স্বপ্নের সেলিব্রেশন।
বাঃ! একা একাই?
কেন তুমি যাবে? চলো। কীর্তন শুনতে যাব।
হয়টা কোথায় ওটা?
কথকতায় যাবে? তাই চলো। দুটোই আমার পছন্দের।
দাঁড়াও ঘরে ফিরি আবার। আর একটা কাগজে অল্প লেখা কিছু আছে। মনে পড়ল। ততক্ষণ
বল যা হোক কিছু...
ঘরে যাচ্ছ? কাগজটা পাবে?
দেখি। সব জড়ো করা আছে এক
জায়গায়... জাস্ট দশ সেকেন্ড।
খুঁজে না পেলে একটা বড় প্যাকেটে সবগুলো পুরে নিয়ে এস। দুজনে একসঙ্গে বিকেলে
খুঁজব...
দরকার নেই। পেয়ে গেছি।
কী লেখা আছে? তুমি লিখেছিলে?
না। কার লেখা জানি না। কারণ ভাষাটা আমার নয়। লেখা, বকুল ফুল বকুল ফুল সোনা
দিয়া হাত কেন বান্ধাইলি? / শালুক ফুটে রাইতে
সোনা? মানে দ্য হ্যান্ড ইস মেড অফ গোল্ড?
না না, তা নয়। দুটো ফুলের হাত সোনা
দিয়ে বাঁধা, এটা বলা হলো।
এটা কি পূর্ণ সারেন্ডার?
সেই রকমই। সব
সময় কাছে কাছে বা একসঙ্গে থাকা।
তাহলে তুমি কি আমাকে এইরকম পেতে পছন্দ করছ?
না। সেটা ভীষণ বিরক্তির। ভীষণ মেন্টাল লোড তৈরি করে।
তাহলে লোড বা ভারমুক্ত হতে চাইছ?
তাও না। এখানে একটা কথা বলার আছে, এটাই একটা স্বপ্ন যেখান থেকে অনুভূতিরা উঠে আসে।
সবার?
সবার। যে কোনো হিউম্যান বিয়িংএর মধ্যে আসলে বোথ মেল ফিমেল দুই রকমই সেক্স একসঙ্গে থাকে। এটাকে বলে অভেদ। মানে কোনো
এক জায়গায় গিয়ে দুজনের এক হয়ে যাওয়া। সেই কবীরের লেখা একটা কবিতা পাঠিয়েছিলাম না তোমাকে, ...যব্ তুম থে তব্ হম নেহি / যব্ হম থে
তব্ তুম নেহি, তুমি আমি বলে আলাদা কোনো অনুভূতি নেই। সব এক।
তাহলে কীর্তনই ভালো। রাধা
বলেছেন, আমার মধ্যে কৃষ্ণ ও রাধা দুইই রয়েছেন। নদের
নিমাইও বলছেন – আমিই রাধা আমিই কৃষ্ণ।
কটায় বের হব?
দুপুর একটু বুড়ো হলে বেরতে পারবে? এই ধরো চারটে টাট্টে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন