উমাপদ কর
হোমা
শুকনো গাছের ছায়া
থেকে
উঠে আসছে বাটার জুতো
আমি তাতে পা-গলিয়ে
চলে যেতে পারি
মহাশূন্যের দোলনায়
ফুলের বিরুদ্ধে ফুল
দাঁড়িয়ে পড়লে
আলাদা করতে পারি না
আমাদের বিরুদ্ধে
তোমরা দাঁড়িয়ে পড়লে
আমার তোমার বিভাজন স্পষ্ট
ফুলের আর আমাদের
ফারাক থেকে
উঠে আসে হোমা পাখির
শূন্যে জন্ম
মহাশূন্যের আমি থেকে
যোজন দূরত্বে
যারা খেলাচ্ছলে গান
গেয়ে উঠবে
আমারও একটা গান
গাওয়ার ছিল
ফটফটে জ্যোৎস্নায়
হেলান দিয়ে গান
যার কথা ও সুরে
মাদকাসক্ত হবে হোমা
একই ভূ-সমলয়ে ঘুরে
যাব দেদার জীবন...
প্রাসাদ
মনোলগ ধরে এই রাজার
প্রাসাদ মনপটে
প্রাচীন পরগাছায় বসে
হালের পায়রা
চকমিলান থেকে বেরিয়ে
পড়া ঝুরো ইট
বাচ্চারা এঁকে এঁকে
হদ্দ, আমিও আঁকতে থাকি
সেই আনারকলির দিন
থেকে...
জনান্তিকে শঙ্খের
আওয়াজও নাকি শোনা যায়
সে আঁকার নয়, অনুভবে
আসে শুধু অনুরণন
তার ছেঁড়া তানপুরায়
বেজে যায় আপন খেয়ালে
আমিও সকলের মতো
গাইতে চেষ্টা করি সুরে বেসুরে
সেই ভাঙা পুকুর
ঘাটের শেষ ধাপ থেকে...
মনে হতে পারে এই
চেনা প্রাসাদের পাশেই কোথাও
আমার দো-চালাটাও কখন
মঞ্জিল হয়ে ওঠে
তোয়াজ করি স্বপ্ন
দিয়ে প্রাণ দিয়ে ভরে তুলি জীবন-আবহ
আসবাব শূন্য একটা
মাত্র ঘর আমি সাজাই প্রাসাদের মতো...
ঝিনুক
নিজেকে খোঁড়ার ধাতব নীল শব্দে বেহুঁশ যখন
কিছু রোদ পেয়ে যাই, অনেকটা ছায়া
জ্যোৎস্না মাখা নদীর পেটে মাছের রূপোলী
নিজেকে ভোলার মারণাস্ত্রগুলো আমাকে হুঁশে নিয়ে আসে
উল্লাস গিলে খায় কোনো এক ভিন্ন মুখের ঢেউ
তরাসে গোঁত্থা খাওয়া বিবশ উল্কা
না জানি কোথায় হারায় অজন্তা ইলোরা
বাকি সব আঁধারের ওপর বিন্দু বিন্দু আলোর চলক
আসুক যবনিকা ফেলতে চাওয়া খয়েরী পর্দা
চাতালে এসে বসে আছে হৃদয়হরণ
ভাবখানা উড়তে চাওয়া শেষ বিকেলের দ্যুতি
ফেরার বুঝি আজ ধরা দেবে বলেই বাজায় ব্যাঞ্জো
আলোকেই বাজি ধরি, ঝিনুকে হাত ছুঁয়ে যায়
আলখেল্লার নিচে নিজেকে লুকোই মুক্তো খুঁজে পেতে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন