বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০১৪

১৬) নাজনীন খলিল



নাজনীন খলিল

চোখগুলো বেঁচে উঠুক

এমন নয় যে
চাঁদে হাত রাখলেই দুহাত সোনালি হয়ে যাবে
বরং জ্যোৎস্নার তপ্ত আগুনে পুড়ে যেতেও পারে।

সূর্যালোকে দাঁড়ালেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে
রাতের আঁচড়ের দাগগুলো
যখন
হাসির আড়ালে মানুষ লুকিয়ে ফেলছে কান্নার চিহ্নগুলো,
তখন
আমি বলছি এটা হয়তো মৃতদের কোনো শহর!  

কখনো কখনো
মানুষের চোখগুলো মাছেদের মতো নিষ্প্রাণ হয়ে যায়
সেসব চোখের দিকে তাকালেই শবদেহের কথা মনে পড়ে
কতটুকু বেঁচে আছে তারা?

একটি কালো দাঁড়কাক টেলিফোনের তারে
একবার ডেকে উঠতেই কে যেন বলল,
আজ কেউ আসতে পারে!
উত্তরকোণে কাক ডাকলে অতিথি আসে।

এমন ধারা কাকতত্ত্বে আমি বিশ্বাসী নই।
তবু কেউ আসুক! অপেক্ষায় থাকি...
আসুক!
আর উন্মত্ত মৃদঙ্গের তালে জাগিয়ে তুলুক এই প্রাণহীন নগরীকে।
নিস্পন্দ চোখগুলোতে একই সাথে ফিরে আসুক
নোনাজল আর অক্ষরের কারুকাজ।
উজানের দূরত্ব

সব  খেলায় একজন রেফারি থাকবে এমন কোনো কথা নেই
অথবা রেফারির হুইসেল
জলক্রীড়ায় তো নয়ই।
যেমন নৌকাবাইচ...

কখনো নামিনি জলে
ভয় ছিল খুব।
আর এখন
ট্রফি শুধু জলশাসনের দক্ষ বিজেতার
জেনেও
উড়িয়ে দিয়েছি সাদা পাল
আর এক অলৌকিক বৈঠায় রেখেছি হাত।
জানি না জল কেটে কতদূর যেতে পারি --

এই যে আচমকা হুট করে নদীতে নেমে যাওয়া
এও তো এক ব্যাখ্যাতীত প্রবল ঘোরের খেলা

জিতি
অথবা
ডুবি
এভাবেই ভেসে যাব যতদূর --

 
একবার ভাটিতে না গেলে, জানা হবে না
 
মাঝনদীর ঢেউয়ের সাথে উজানের দূরত্ব কতটুকু!




মেঘমল্লার বাজে

বাজে
মৃদঙ্গ। মেঘমল্লার। ময়ূর পেখম।
কাম্যবৃষ্টি ঝরে।

বাঁশিতে বাঁধা ছিল মেঘমল্লারের সুর  
তুই চাইলি বলে
হাজার একর আকাশ জুড়ে বৃষ্টি নামিয়ে দিলাম।

তুই কেন ভিজলি না তবু?

হায় পিপাসার্ত মানুষ!
বরফের চাঁই ভেবে আগুন জ্বালায় সাদা পাথরের নিচে
পাথরে পাথর ঘষে।
আর কখনো কখনো
এই পাথুরেধোঁয়া থেকেই ছড়িয়ে পড়ে ধূপসুগন্ধীঘ্রাণ
উড়ে আসে গন্ধবিভোর চকোরেরা,
আগুনের আঁচে ছাই হয়।

খরার উজানে যেতে যেতে ছুঁয়ে ফেলি সমুদ্রের ঢেউ।
নোনাজলে গোড়ালি ডুবে গেলে
চাইলাম আকাশ আবার ফিরিয়ে দিক
সাগরের শুষে নেয়া জলকণারাশি


আমার বাঁশিটা দিয়ে দিলে
তুই কি এমন বৃষ্টি নামাবি?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন