সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

০৭) নবেন্দু বিকাশ রায়

ফান ফ্যাক্টরি
নবেন্দু বিকাশ রায়



যৌনদৃশ্য? না। ভুল হলো। সেটা অন্য ব্যাপার। যৌনতার দৃশ্য? হ্যাঁ। না। শ্রাব্য। যেন কানের ভিতর দিয়া চরমে পশিল গো! অথবা একটু মনোযোগী হতেই কর্ণকুহর থেকে অক্ষিকোটর থই থই সেক্স। উফ্‌ মাগো! এই অনন্ত সেক্সের মধ্যে আমি নিমিত্ত মাত্র। না। জিভ। হ্যাঁ। ত্বক। হ্যাঁ। নাক? বিদেশী ছবির কথা মনে পড়ছে, আমিনা। সুগন্ধি মেয়েদের শরীর ছেঁকে বানানো সেই পারফিউম, আততায়ীর কাহিনী। তোমার কোন্‌ সুবাস, আমিনা, ও সুবাসিনী?

আমি ও আমিনা। অথবা আমার বদলে বারীন। বারীনের বদলে রঞ্জন। রঞ্জনের বদলে হয়তো আমি। আমিনার বদলে শুধু আমিনা।

আমিনার ঘাড়ের চামড়ায় নাক ডুবিয়ে বলি, এটা কি পারফিউম, আমিনা? কোন্‌ ব্র্যান্ডের? আমিনা ঘাড় কুঁচকে, ভালো, না? আমি উম্‌ উম্‌ ক’রে জানাই খুব ভালো। মনে হচ্ছে যেন গা থেকে গন্ধের পানীয়। গভীর জঙ্গলে দেখা সেই কূপের কথা মনে পড়ছে। কতটা গভীর থেকে উঠত সে জল? ওর সারা শরীর জুড়ে আমি দৈত্যাকার সব কপিকল দেখতে পাই। আমিনাকে খুঁড়ে খুঁড়ে আমিনা বেরিয়ে পড়ছে। আমিনা কুলকুল ক’রে হেসে ওঠে। রেভলন। এ ফিফটি ফাইভ। টুয়েল্ভ হান্ড্রেড বাকস্‌ অনলি।

ফাক! আমিনা! মাই গুডনেস! আজ থেকে তোমার ঘাড়ের নাম রেভলন। আমিনা আবার কুলকুল। আর ইউ কিডিং?

আঙুলগুলো সব গিলে ফেলব ভাবি, এত সুন্দর যে মুখের মধ্যে খানিকক্ষণ রাখতে সাধ হয়। নখে কি সমুদ্র থাকে? নুন তৈরি হচ্ছে আমার জিভের ওপরে। নখের ওই নীল, যার নাম আমি মনে মনে রাখলাম ল্যাকমে, তা কেবল তোমার জন্যে, আমিনা। ও ঈশ্বর! হায় ঈশ্বর! মানব- যৌনতার ব্যাটন নাকি এখন আমার হাতে। একের পর এক দেহখন্ডের নাম দিতে থাকি আমি। তাদের রূপ, রঙ, গন্ধ, বর্ণ অনুসারে কেউ হয় এল এইটিন, গার্ণিয়ের, থ্যালগো অথবা শালিমার। আমিনা রাগের অভিনয় করে। কি হচ্ছেটা কি? ইউ পারভার্ট। রেভলন থেকে থ্যালগো পর্যন্ত এসে আমি থেমে যাই, হোঁচট খেলাম যেন। অ্যাম আই সো? রিয়েলি? সতীর গল্প জানো, আমিনা? ৫২টা খন্ড ছড়িয়ে আছে সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে। তাদের প্রত্যেকের নাম শুনবে?

আমিনা একটু অন্যমনস্ক যেন। জানো, আমারও ইচ্ছে করছে তোমার অন্য একটা নাম রাখি। সর্বক্ষণ এই ‘আমি আমি’ আর ভালো লাগছে না আমার।

একটা অর্গ্যাজম কল্পনা করি। প্রার্থনা করি। অনামনীয় অন্ধকারের মধ্যে মাংস ডুকরে ওঠে। হয়তো নির্বাসন নয়, নিয়োজনই সর্বোচ্চ শাস্তি; জিলেটে নিযুক্ত আমি আমিনার কাছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বোধ করি। মানুষের এই সীমাবিহীন যৌন প্যারেডে বিস্ময় জাগে। রে-ব্যান বুঁজে অস্ফুটে বলে ওঠে আমিনা।

জিলেট? লাইক জিলেট ব্লেড?

হ্যাঁ। তাই-ই তো!

আমাকে কী ভাবো তুমি? আ বাস্কেট অফ ফাকিং কমোডিটিস?

না, আমিনা। অতো নিচে নামিও না এই যৌনতার মাহোলটাকে। বুঝতে পারছ না, প্রথম ডি এন এ থেকে আজকের মানুষ, পাথরের হাতিয়ার থেকে শুরু করে হালের সানসক্রীম সবাই, সব কিছু, অল গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস কীভাবে অপেক্ষা করে আছে এখনকার এই সেক্সটুকুর জন্য! আমিনাকে আমি বলতে পারি না, বলাটা হয়তো উচিতও নয়, কমোডিটি শুনলেই আমার কেমন যেন কোমোডের কথা মনে পড়ে। থকথকে শুভ্রতার ঠিক মধ্যিখানে টলমল অভীষ্ট।

আমিনা আমাকে ঠেলে সরিয়ে দেয়। মুখের ওপর হাত চাপা দিয়ে শুয়ে থাকে পাক্কা আধ মিনিট। মুখ থেকে হাত যখন নামল, দেখি সলাজ হাসিতে আরও ডাগর হয়ে উঠেছে আমিনা। আমাকে কাছে টেনে নিয়ে আমিনা বলে, ফান ফ্যাক্টরি, নো?

1 টি মন্তব্য:

  1. Bhashar khela theke shorirer khela...ami theke ja ja ami-na shei shob niye kheladhula...Thik Nabendur moto...tor ekta signature style toiri hoyechhe, lekha porlei bojha jay...nam lage na ba 'onamoniyo'...ei lekhatay jounokriyake je je bhabe define kore gechhish sheta shob cheye bhalo laglo, bisheshoto ongangshogulor alada alada kore nam deoar byparta...sheshe ponyo o dhuke porlo ekhane...fun fun funayoman!

    উত্তরমুছুন