লিপস্টিক
শ্রাবণী দাশগুপ্ত
গোলাপী লিপস্টিকটা তুলে নিয়ে আয়নার সামনে ঝুঁকে দাঁড়াল শ্বেতা। লাগালো না। নাক কুঁচকে ঠোঁটদুটো ফাঁক করে দাঁত দেখলো নিজের। ঝকঝকে পরিপাটি, সুস্থ গোলাপি মাড়ি। মুখের একমাত্র সুন্দর অংশ। বেজারমুখে লিপস্টিকটা আঙুলে ঘোরাতে লাগলো। লাগাতে হবে? লাগাতেই হবে? ডিম্বাকার ফ্যাটফ্যাটে ফর্সা মস্ত মুখ। গোলগোল চোখ, কাজল না পরলে মরা মাছের মতো। বড়ি নাকের ঠিক নিচে ছোট্ট একটা সরলরেখা। কবে যেন গানের ক্লাসে গোমড়া বসেছিল। পূর্বিতা ফিকফিক, “ঠোঁট বন্ধ রাখলে তোকে না একটু হনুমান-টাইপ...।” সে দুঃখীচোখে তাকাতে পূর্বিতা বলেছিল, “প্লিজ কিছু মনে করিস না রে, জাস্ট মজা!” পরের ক্লাসে একটা সরু বাদামী পেন্সিল মতোন দিয়েছিল, “এই নে। আগে এই লাইনার দিয়ে প্রমিনেন্ট করে এঁকে নিবি, তারপর ডীপ লিপস্টিক।” শ্বেতা বেশ একটু খুশি হয়েছিল, “ধ্যাত, ওসব পারব না।” দিনদুই পরে তুহিন রেস্টুরেন্টের ঘুমন্ত আলোয় একদৃষ্টিতে তার ঠোঁটের দিকে তাকিয়েছিল। উত্তেজনায় তার গা শিরশির করছিল। নিশ্চয়ই আগের দিনের মতো বলবে না, “ধুর, তোকে চুমু খাওয়া যায় না... ঠোঁটই নেই।” সেদিন শ্বেতার অভিমান হয়েছিল। একটু ঝগড়া করেছিল,“কেন রে? সব্বাই তো বলে পাতলা ঠোঁটই সুন্দর!” তুহিন বলেছিল, “তা বলে এরকম? আমি কি এঞ্জেলিনা জোলি চেয়েছি?” আজ শ্বেতা ভরপুর আত্মবিশ্বাসী। তুহিন চশমাপরা চোখ বিস্ফারিত করে বলল, “এই! ঐরকম গোঁফ এঁকেছিস কেন? জঘন্য দেখাচ্ছে!” অপমানে চোখ ডবডবে। ভারি তো ছ’মাসের বয়ফ্রেন্ড! এঞ্জেলিনা জোলি, ঐশ্বর্য রাই, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া; দিম্মার যুগের সুপ্রিয়া দেবী, কিম্বা টিভির নিউজ রিডার, মডেল, সবার ঠোঁট পদ্মের পাপড়ির মতোন? সেক্সি? নিঁখুত? আকর্ষক? তারই শুধু বিতিকিচ্ছিরি? শ্যেনদৃষ্টিতে আজকাল সে পথেঘাটে ঠোঁট দেখে। কতরকম! পোড়াটে কালো, ফাটাফাটা, ঝোলা, ওলটানো, ছ্যাতড়ানো, পুলটিসের মতোন মোটা, কোণে থুতু-জমে থাকা, নকল আঁকা, নরম গোলাপী। পঁচিশ বছরের শ্বেতা নিজের আবিষ্কারে মশগুল। লোকে যা খুশি ভাবুকগে!
পাত্রের ফোটো দেখেনি। দেখতেই চায়নি। বৌদি চোখ টিপেছিল, “জানিস্ শ্বেতা, ঠোঁটদুটো বেশ...!” মা বন্ধ দরজায় চাপা ধাক্কা, “এ্যাই শ্বেতা, হলো তোর? শিগগীর বেরো। ছেলের বাবা তাড়া দিচ্ছেন।” সে আর কয়েক মুহূর্ত ভাবল। লিপলাইনারটা দিয়ে স্পষ্ট মোটা ঠোঁটজোড়া আঁকল আয়নার কাচে। লিপস্টিকটা দিয়ে রঙ ভরলো ঘষে ঘষে। তারপর দুটোকেই ছুঁড়ে দিল জানালার বাইরে এবং গর্বিতভাবে দরজা খুলে দিল।
গোলাপী লিপস্টিকটা তুলে নিয়ে আয়নার সামনে ঝুঁকে দাঁড়াল শ্বেতা। লাগালো না। নাক কুঁচকে ঠোঁটদুটো ফাঁক করে দাঁত দেখলো নিজের। ঝকঝকে পরিপাটি, সুস্থ গোলাপি মাড়ি। মুখের একমাত্র সুন্দর অংশ। বেজারমুখে লিপস্টিকটা আঙুলে ঘোরাতে লাগলো। লাগাতে হবে? লাগাতেই হবে? ডিম্বাকার ফ্যাটফ্যাটে ফর্সা মস্ত মুখ। গোলগোল চোখ, কাজল না পরলে মরা মাছের মতো। বড়ি নাকের ঠিক নিচে ছোট্ট একটা সরলরেখা। কবে যেন গানের ক্লাসে গোমড়া বসেছিল। পূর্বিতা ফিকফিক, “ঠোঁট বন্ধ রাখলে তোকে না একটু হনুমান-টাইপ...।” সে দুঃখীচোখে তাকাতে পূর্বিতা বলেছিল, “প্লিজ কিছু মনে করিস না রে, জাস্ট মজা!” পরের ক্লাসে একটা সরু বাদামী পেন্সিল মতোন দিয়েছিল, “এই নে। আগে এই লাইনার দিয়ে প্রমিনেন্ট করে এঁকে নিবি, তারপর ডীপ লিপস্টিক।” শ্বেতা বেশ একটু খুশি হয়েছিল, “ধ্যাত, ওসব পারব না।” দিনদুই পরে তুহিন রেস্টুরেন্টের ঘুমন্ত আলোয় একদৃষ্টিতে তার ঠোঁটের দিকে তাকিয়েছিল। উত্তেজনায় তার গা শিরশির করছিল। নিশ্চয়ই আগের দিনের মতো বলবে না, “ধুর, তোকে চুমু খাওয়া যায় না... ঠোঁটই নেই।” সেদিন শ্বেতার অভিমান হয়েছিল। একটু ঝগড়া করেছিল,“কেন রে? সব্বাই তো বলে পাতলা ঠোঁটই সুন্দর!” তুহিন বলেছিল, “তা বলে এরকম? আমি কি এঞ্জেলিনা জোলি চেয়েছি?” আজ শ্বেতা ভরপুর আত্মবিশ্বাসী। তুহিন চশমাপরা চোখ বিস্ফারিত করে বলল, “এই! ঐরকম গোঁফ এঁকেছিস কেন? জঘন্য দেখাচ্ছে!” অপমানে চোখ ডবডবে। ভারি তো ছ’মাসের বয়ফ্রেন্ড! এঞ্জেলিনা জোলি, ঐশ্বর্য রাই, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া; দিম্মার যুগের সুপ্রিয়া দেবী, কিম্বা টিভির নিউজ রিডার, মডেল, সবার ঠোঁট পদ্মের পাপড়ির মতোন? সেক্সি? নিঁখুত? আকর্ষক? তারই শুধু বিতিকিচ্ছিরি? শ্যেনদৃষ্টিতে আজকাল সে পথেঘাটে ঠোঁট দেখে। কতরকম! পোড়াটে কালো, ফাটাফাটা, ঝোলা, ওলটানো, ছ্যাতড়ানো, পুলটিসের মতোন মোটা, কোণে থুতু-জমে থাকা, নকল আঁকা, নরম গোলাপী। পঁচিশ বছরের শ্বেতা নিজের আবিষ্কারে মশগুল। লোকে যা খুশি ভাবুকগে!
পাত্রের ফোটো দেখেনি। দেখতেই চায়নি। বৌদি চোখ টিপেছিল, “জানিস্ শ্বেতা, ঠোঁটদুটো বেশ...!” মা বন্ধ দরজায় চাপা ধাক্কা, “এ্যাই শ্বেতা, হলো তোর? শিগগীর বেরো। ছেলের বাবা তাড়া দিচ্ছেন।” সে আর কয়েক মুহূর্ত ভাবল। লিপলাইনারটা দিয়ে স্পষ্ট মোটা ঠোঁটজোড়া আঁকল আয়নার কাচে। লিপস্টিকটা দিয়ে রঙ ভরলো ঘষে ঘষে। তারপর দুটোকেই ছুঁড়ে দিল জানালার বাইরে এবং গর্বিতভাবে দরজা খুলে দিল।
চমৎকার... এমন ভাবেও ভাবা যায়!!
উত্তরমুছুনচমৎকার...
উত্তরমুছুনকী করে একটা মেয়ে এইভাবে কয়েকটা শব্দের আঁচড়ে দৃশ্যময়ী হয়ে ওঠে!
উত্তরমুছুনপরিমিত কথায় চমৎকার খুলে গেল ঠোঁটের সামনে লিপস্টিক, শ্রাবণী।
উত্তরমুছুনপরিমিত কথায় চমৎকার খুলে গেল ঠোঁটের সামনে লিপস্টিক, শ্রাবণী।
উত্তরমুছুনবারীন ঘোষাল
বারীনদা' আপনার মতামত খুব উতসাহিত করে, অপেক্ষায় ছিলাম,
উত্তরমুছুনশ্রাবণী,।
বারীনদা,আপনার মতামত খুব উৎসাহিত করে,অপেক্ষায় ছিলাম।
উত্তরমুছুনশ্রাবণী