জবাবদিহি
মলয় রায়চৌধুরী
স্কুলের পর্ব শেষ হইবার পর আমি স্বগৃহ হইতে কয়েকবার পলায়ন করিয়াছিলাম। কলেজে প্রবেশ করিয়াও পলাইয়াছি বারকয়েক। একা নয়, আমার পলায়নের সঙ্গী হইত সহপাঠী তরুণ শূর। তরুণ আমার নিকটতম বন্ধু ছিল। তাহার প্রধান কারণ আমরা দুইজনই একাকীত্ব ভালোবাসিতাম এবং একত্র হইলেও পরস্পরের সহিত কথাবার্তা বিশেষ বলিতাম না। পাশাপাশি হাঁটিতাম, ট্রাকে অথবা ট্রেনে চাপিয়া দূরদেশে যাইতাম, ধাবায় বসিয়া দ্বিপ্রহরের তড়কারুটি বা ভাত-মাংস খাইতাম। একান্ত প্রয়োজনীয় কথাবার্তা ছাড়া বিশেষ বাক্যালাপ হইত না।
গৃহ হইতে পলায়ন করিতে হইলে বাবা-মাকে অগ্রিম সংবাদটি জানাইয়া তো আর যাওয়া যায় না। হঠাৎই একদিন একবস্ত্রে দুইজনে পলাইতাম। তরুণ ছিল সচ্ছল পরিবারের। টাকাকড়ি সে-ই খরচ করিত।
গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর বাবা বা মা কেহই কোনো প্রশ্ন তুলিতেন না। কখনও তোলেন নাই। এমন ব্যবহার করিতেন যেন ব্যাপারটি স্বাভাবিক।
একবার পরপর বেশ কয়েকদিন তরুণ আমাদের গৃহে আসিল না। উহার পিতার সহিত যোগাযোগ করিতে উনি জানাইলেন যে, তরুণের লিউকেমিয়া হইয়াছে, চিকিৎসার জন্য পাটনা হইতে কলিকাতা লইয়া যাইতেছেন।
গৃহ হইতে পলায়নের পর্বে ছেদ পড়িল। স্নাতকোত্তরের পর আমি চাকুরিতে প্রবেশ করিলাম। চাকুরিতে প্রবেশের কয়েক বৎসর পর বিবাহ করিলাম। আমার একটি কন্যা সন্তান হইল। অফিস হইতে ফিরিয়া কন্যার সহিত খেলিতাম।
একদিন অফিসেই এক সহকর্মীর মুখে শুনিলাম যে তরুণের মৃত্যু হইয়াছে।
মৃত্যুসংবাদটি শুনিয়া, গৃহে প্রত্যাবর্তন করিয়া সোফায় হেলান দিয়া চুপচাপ বসিয়াছিলাম।
সন্ধ্যা হইয়া গিয়াছিল।
আমার চার বৎসরের কন্যা ঘরে ঢুকিয়া আমার সন্মুখে দাঁড়াইল, তাহার ছোটো-ছোটো দুটি হাত পিছনে। তিরস্কারের সুরে কহিল, "তুমি দাদু-ঠাকুমাকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে পালাতে?"
মলয় রায়চৌধুরী
ছবি : যে সময়ে পলায়ন করিতাম সেই সময়কার ফোটো |
গৃহ হইতে পলায়ন করিতে হইলে বাবা-মাকে অগ্রিম সংবাদটি জানাইয়া তো আর যাওয়া যায় না। হঠাৎই একদিন একবস্ত্রে দুইজনে পলাইতাম। তরুণ ছিল সচ্ছল পরিবারের। টাকাকড়ি সে-ই খরচ করিত।
গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর বাবা বা মা কেহই কোনো প্রশ্ন তুলিতেন না। কখনও তোলেন নাই। এমন ব্যবহার করিতেন যেন ব্যাপারটি স্বাভাবিক।
একবার পরপর বেশ কয়েকদিন তরুণ আমাদের গৃহে আসিল না। উহার পিতার সহিত যোগাযোগ করিতে উনি জানাইলেন যে, তরুণের লিউকেমিয়া হইয়াছে, চিকিৎসার জন্য পাটনা হইতে কলিকাতা লইয়া যাইতেছেন।
গৃহ হইতে পলায়নের পর্বে ছেদ পড়িল। স্নাতকোত্তরের পর আমি চাকুরিতে প্রবেশ করিলাম। চাকুরিতে প্রবেশের কয়েক বৎসর পর বিবাহ করিলাম। আমার একটি কন্যা সন্তান হইল। অফিস হইতে ফিরিয়া কন্যার সহিত খেলিতাম।
একদিন অফিসেই এক সহকর্মীর মুখে শুনিলাম যে তরুণের মৃত্যু হইয়াছে।
মৃত্যুসংবাদটি শুনিয়া, গৃহে প্রত্যাবর্তন করিয়া সোফায় হেলান দিয়া চুপচাপ বসিয়াছিলাম।
সন্ধ্যা হইয়া গিয়াছিল।
আমার চার বৎসরের কন্যা ঘরে ঢুকিয়া আমার সন্মুখে দাঁড়াইল, তাহার ছোটো-ছোটো দুটি হাত পিছনে। তিরস্কারের সুরে কহিল, "তুমি দাদু-ঠাকুমাকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে পালাতে?"
Youг oωn artiсle providеs verіfied neceѕsary tо us.
উত্তরমুছুনIt’s quite usеful and you гeallу are сlearly verу well-informеd in this arеa.
You have got opened my οwn sight in οrder to different νiews on thiѕ specific matter along with intrіguing, nοtable anԁ
soliԁ cоntent.
My web page ; clonazepam
সব ছেড়ে যে পালাল, তার খবর নেবার আর কেউ রইল না !
উত্তরমুছুনসব ছেড়ে যে পালাল, তার খবর নেবার আর কেউ রইল না।
উত্তরমুছুন