কবিতার কালিমাটি ১৩৮ |
মানুষ খোঁজা
মাঝেমাঝে খুব একা লাগলে
আমি মানুষ খুঁজি
গাছের মতো প্রিয় মানুষ
অরণ্যের মতো গভীর মানুষ
পাখির মতো প্রাণবন্ত মানুষ
নদীর মতো দিলখোলা মানুষ
পাহাড়ের মতো উদার মানুষ
আকাশের মতো উন্মুক্ত মানুষ
প্রকৃত মানুষ খুঁজে পেলে
তাকে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করে
আমার হৃদয়ের চোরা কুঠুরিতে
আমার প্রতিটি আলোকিত কক্ষ,
প্রতিটি সীমাহীন অন্ধকার
তাকে দেখাতে ইচ্ছে করে
তাকে পেয়ে খলবল করে
কথা বলতে শুরু করে
আমার গুমরে ওঠা দুঃখগুলো।
দহন
ধুলোর ঝড় উঠেছে মরু রাত্রিতে
চাপচাপ অন্ধকার
বিষাদ নদীর শীতল স্রোতের আবর্ত
ঘুটঘুটে মধ্যযুগীয় অন্ধকারে
পেঁচারা ওড়াউড়ি করছে
আমার দু'হাতে শুধু সূর্য পোড়া ছাই
তুমি নেই
তোমার আমার মধ্যে অনন্ত গ্যালাক্সির ব্যবধান।
আরও দূরে সরে যাচ্ছি আমরা
আমার চারিদিকে দাবানল
আমার বুকের ভিতরে জ্বলন্ত ভিসুভিয়াস
আমার চারিদিকে পাথর ভাঙার শব্দ
আমার হৃদয়ের স্ফটিকটা ভেঙে
কাচের টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে মেঝের ধুলোয়
কান্নারা বোবা হয়ে গেছে
অশ্রুরা স্তম্ভিত
ভাঙা মাস্তুল হাতে নিয়ে আমি একলা দাঁড়িয়ে আছি।
সেই জন্মানোর কতো আগে থেকে
তোমাকেই পৃথিবী বলে জেনেছি
তুমিই দিয়েছ রক্ত-মাংস সব!
আলোতে আসার পরেও
তুমিই ছিলে আমার পৃথিবী
আমার শুধু ঋণ আর ঋণ।
ঋণের ভারে কুঁজো হতে হতে
অবশেষে তোমাকেই আঁকড়ে ধরি।
আমার সমস্ত ব্যথাতে তুমি মলম লাগিয়ে দাও।
আমাকে আরও আলো দাও, আরও ছায়া দাও।
কে বলে স্বর্গ নেই?
সব জায়গা থেকে গোহারান হেরে এসে
তোমার কাছে একটু বসলে মনে হয়-
স্বর্গেই তো আছি!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন