সোমবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৪

অনিরুদ্ধ সুব্রত

 

কবিতার কালিমাটি ১৩৫



সিদ্ধ 

সময়ের খণ্ডিত খণ্ডগুলির সঙ্গে

ঘটমানের খোসা ছাড়ানো দানা

দুইই মিশিয়ে, দিই হাঁড়িতে বসিয়ে

মুখোমুখি বসে দেখি-- তার টগবগ

ব্যথিত তরলের নিচে, মৃত্যুর আঁচ।

খিদে ছিল, খিদে আছে, বারোমাস

তবু অসম ব্যঞ্জনের অসিদ্ধ গানে

গন্ধ-বিজ্ঞানে, সে ধোঁয়া ও বুদবুদে

রেখেছে-- কী দারুণ ক্ষুধার্ত করে।

সন্ধের আগে-- নিশ্চয়ই নেমে যাবে

নেমে যাবে, রসহীন রসনার ফাঁকে

এই বিশ্বাস আগুনের শিখা-চোখে

জঠরে যখন নিঃসৃত ষড়রস এসে

চুপ, ধারণাকে ধরেছে ঢাকনার মুখে।

 

নায়িকা

 

পূর্বাপর পোস্টারে দেখেছি, মুখটি সুখী সৌখিন

সুযোগে তাকে খুঁজে, কাঁচা আঠার দেয়াল থেকে

লেপ্টে যাওয়ার ফাঁকে টেনে, ছিঁড়ে, মুখটা এনে

সেঁটেছি দরমা বেড়ার ঘরে, ফাঁক বোজাতে।

 

কেরোসিন সংস্কৃতির আলো নিভিয়ে বাড়িয়ে

ঢেউটিন চালা থেকে ছলকানো সূর্যে বা ছায়ায়

দেখেছি দীর্ঘ মুখ চেয়ে তার, খিদে ঘুমে, যাপনে

পূর্বাপর নতুন কাহিনির, নবতম পোস্টার দেয়ালে।

 

সেও যে দেখেনি তা নয়, মুখোমুখি একই ঘরে

দেখেছে সে চুপ, জ্যান্ত কান্নায় বা উলঙ্গ অবয়বে

দিনে রাতে খিদে, রক্তপাতে, অলস ও নিরলস-এ

সেই পোস্টার থেকে, চির সিনেমার মতো মুখ করে।

 

বাসন্তিকা

 

এই যে তুমি বলো, আহা হা বসন্ত!

এই যে পলাশে, শিমুলে তুমি গলিত

সব রং এসে তোমার বুকে লাগে

তুমি কচি মেহগনি পাতা বোধ করো,

 

আমি তোমাকে একটা মার্চের দুপুর দিলাম

টেবিলে জলের গেলাসে চাপা কাগজ

কলমের খুলেছ মুখ, লেখোনি তখনও

প্রথম ফ্যানের হাওয়া, না জানলার রোদ্দুর

কোনটা ঠিক লাগে যখন জানো না তুমিও,

 

আচ্ছা, ঘর ছেড়ে বারান্দায় না হয়

না হয় তো গেট পেরিয়ে গলি, পেরিয়ে রাস্তা

রাস্তা ধরে খানিকটা ভিডিও গেমের শহর

হেঁটে যাও না জানি, গাড়ি করে একটু গেলে গ্রাম

চলো দেখি, শোনাও তোমার বসন্তের নাম গান,

 

কোথায় দেখেছ দুরন্ত প্রেম, চুপচাপ ধানক্ষেত

ঝরাপাতা প্রসঙ্গ বিলাপ তখনও গাছের পাড়ায়

ধুলো জমে আছে হাজার সবুজের উপর

এলোমেলো দক্ষিণ হাওয়ায় উড়ছে শুকনো শব।

 

 

                                      

 

 

 

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন