সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

বিদিশা সরকার

 

কবিতার কালিমাটি ১২৭


এই লভিনু সঙ্গ


নিমিত্তের ভাগী। উদ্বৃত্তের স্বাদ অনেকটা বিয়েবাড়ির বাসি ব্যঞ্জন। তোমার প্রতিটা দাগ যদিও স্পষ্ট, জবাবদিহির দায় নেই। পথ তো আর নদী নয় যে - নৌকা, দিক আরও ভিন্নতর অজুহাত। পথে রোসো পথে বোসো - দেখা হয়ে গেল গুরুভাইয়ের সঙ্গে বা রক্তদান শিবিরে লম্বা লাইন! জনহিতকর অছিলায় হাসির সঙ্গে হাসিলের চাকু। আমি প্রস্তুত। মৃতের মিছিলে অচেনা মুখগুলো...

অনিবার্য জেনেই স্বেচ্ছায়। কথা বলার গরজ নেই। ক্ষিদে ফুরিয়ে গেলে উপচে পড়া খাবার কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে যারা তারা নাটকে মৃত সৈনিকের প্রয়োজনে। হে চক্ষুষ্মান! হে ঈশ্বরনামিত মহামানব তোমার অপার মহিমায় আমার এই বাড়বাড়ন্ত ভক্তকুলের পরম আহ্লাদ দেখে তোমার ঈর্ষা স্বাভাবিক।

অথচ আমি ভিজছি। আমার সন্তানেরাও। লীলা সাঙ্গ হলে বৈভবের অপলাপ বিষয়ের নাতিদীর্ঘ ভাষনের মদিরার উচ্ছিষ্ট, তাই সই। বারেক তথাস্তুতে নিমজ্জমানার ভক্তি বিষয়ে আর কত পরীক্ষা?

 

পতন


সেই ক্ষীণ তটিনীটি আদ্যক্ষরেই শত বিভাজিকা। জলসেচের প্রয়োজন বুঝে ক্ষেত খামারের খরার গল্প জনে জনে বাটোয়ারা শেষে ফিরে এলে মরশুমি আদিম সভ্যতায়। তখনও ঘুম জড়ানো, আলস্যের গিঁট খুলে মহামায়াতলায় বসে থাকা -- ভনিতা আর পূর্বরাগের ছটায় যখন কোনও নদীই বোধগম্য নয় তখন প্রসাদী ফুলে বীতরাগ অহেতুক নয়। গঞ্জনার পাশে বসে থাকে অঞ্জনা। তুমি তাদের কারোকেই চেন না। সাধ মিটলে যে আর আসবে না।

এক ডুবে স্নান সেরে এসে দেখি সারা গায়ে শাপলা জড়ানো। চুল চুইয়ে চুইয়ে মেয়াদি জল, না জ্বর! অজুহাতের কাছে ধরা পড়ে গেলে ভৈরবীতলায় ধর্ণা। মনস্কামনারা জামিনে খালাস। তোমার হাসির সঙ্গে পূরবের হাসির কত মিল, অথবা তোমার পাল তোলা আসমান-জমিন! নিষিদ্ধ জীবন থেকে ফিরে যাচ্ছ ভিটের রাখাল। শুধু বললে না, পূরবের বাপটা কে?

 

কবিতার রাত ১

 

কন্ঠস্বর বদলে নিতে হয়

কন্ঠস্বর প্রয়োজনে বদলে যায়

আত্মস্তুতি যে একটা প্রয়োগ কৌশল

বুঝতে বুঝতে মাঝরাত পর্যন্ত মেট্রোরেল

 

বিছানায় হিম পড়লে কোলবালিশ ফেটে তুলোর পাহাড়

মুখ গুঁজে পড়ে থাকা রেবেকা পৌঁছতে পারে না

হারমোনিয়াম অব্দি

তার আগেই গরম তরল স্বরবর্ণের পন্ঞ্চম অক্ষরে

উৎকন্ঠা জুড়িয়ে গেলো কন্ঠস্বর বদলে যায় বৈকি

 

কবিতার রাত ২

 

সেরামিক দেওয়ালে এসে থেমে গেল

প্রভুত্ববিলাস

সিঙ্গল্ বিছানা জুড়ে বিসুভিয়াসের লাভাজ্বর

টিকোজিতে চাপা দেওয়া ফিল্টার কফি’র ক্রাইম সিরিজ

ওসবেই দেখে নেওয়া কুত্তি বানিয়ে সারা ভাদ্রমাসে

নরম পোশাকে নীল কতখানি লোহিতের

শিবির বানায় –

এরপর ও বলেছিলে পরিব্রাজক হয়ে ইতিহাসে যারা

হরপ্পা আদলে ছিল শিল্পকলা

ফসিল উপমা

 

পরিধি

 

উপহারের ফুলগুলোতে কুন্ঠা,

আমার বিষয়েও --

এই অন্যমানে যদিও সন্দেহপ্রবণ নয়

তবুও পূর্ণিমা বিষয়ে আর কথা, থাক

আজ থাক বাক্ স্বাধীনতায় সংযম

যা আমাদের বরাবরই ঠেলে দিয়েছে

এক একটি প্রকোষ্ঠে

আমরা চাষ আবাদের মধ্যে

জলসেচের প্রয়োজনে নিযুক্ত করেছি শ্রমিক মৌমাছি

মধুঃক্ষরণের আ্যাপিয়ারি থেকে অন্নদাসকে বরখাস্ত করেছি

আচরণের বর্ণবৈষম্যে

অভিবাদনের পালক টুপি

হারিয়ে ফেলেছি

অনুশোচনায়

হয়তো তুমিও জানো বিষাদের কারণে অবগুণ্ঠন

সমস্ত জিজ্ঞাসার উত্তর যেখানে সংরক্ষিত থাকে সন খ্রিস্টাব্দ সহ


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন