সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩

অসীম শর্মা

 

কবিতার কালিমাটি ১২৭


কাফকার প্রেম 

 

হাঁটতে হাঁটতে একদিন কাফকার

প্রেমিকার সাথে দেখা হয়েছিল।

আগেকার দিনে করোনার কালে

আমরা কত যে পাশাপাশি হেঁটেছি!

এখন প্যারিস করোনা মুক্ত, সকালে

রোজ বৃষ্টি পড়ে।

 

দূর বহুদূর থেকে ওকে দেখতে পাই,

গগন সে দূর

 

রাস্তায় অন্যমনস্ক থাকলে হঠাৎ হঠাৎ

টের পাই,

সঙ্গে হাঁটছেন কাফকার প্রাচীন প্রেমিকা।

যেন কবেকার, প্যারিসের

আবর্জনাভরা নিচু রাস্তা পায়ে মাড়িয়ে।

 

রাস্তা সরু হয়ে আসে নদী কত

ক্ষীণকায়, মৃদুল মেদের সারি

হাসি না

 

নয়নতারা

 

শেষ রাতের চিহ্নটা আমি দেখতে

পেয়েছি নয়নতারা

নিজে হাতে তোমার লাল চিবুকটা

তুলে ধরেছিলে

আমার হাতে।

 

এখন শান্ত আমি, সব কষ্ট

ক্ষোভ আর সন্দেহের পাহাড়

গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেছে

আমি এখন রাতে ঘুমোতে পারি।

 

আর ততটা একা লাগে না

নেশার চাহিদা কমে গেছে।

তবু দেখা পাইনি--

কন্ঠস্বর কেন লুকিয়ে রেখেছো

বারবার ফোন কেটে দিচ্ছে অভিমানী পাখি?

যাপনের কোন অবসরে তুমি

দেখতে চাইবে

আমার বসে যাওয়া মুখ

আর গলে যাওয়া দুচোখের

রোদ্রুহীন আতংকের অপেক্ষার ছায়া

 

যদি তাই ভালবাসো

আমি এইখানে থেমে যাই

 

নগ্নতর ঘাম ও সাদায়

       

উপার্জন

 

প্রতিদিন এক গোলাপের ওপর আমি হাত রাখি।

অর্ধনিমিলিত কুঁড়ির আধারে সে শুয়ে থাকে,

প্রতিদিন এক বলাকার দিকে আমি হাত বাড়াই

তাকে পালন করতে চাই,

সে আমাকে নীরব চঞ্চচু

বুলিয়ে লালন করে

নখ দিয়ে দিয়ে আদর কেটে যায়।

 

প্রতিদিন একঝাঁক কাঁটা এসে রক্ত ঝড়ায়

প্রতিদিন চোখ খুলে দেখি

কয়েকটা সবুজ পালক বিছানায়

 

প্রতিদিন প্রতিদিন উপার্জনে মন দিতে হয়   

 

ঋতু

 

আমাকেই খুঁজে নেবে শীত

আমাকেই খুঁজে নেবে শুকনো বাতাস

এই কথা জেনে নিয়ে প্রখর নিদ্রায় ঘুমিয়েছি

সারাটা গ্রীষ্ম বর্ষাকাল জল নেমে গেছে ভিজে বিছানায়

 

এখন শীত কাল চলে গেলে চোখ মেলে দেখি

পৃথিবী ঘুর্ণায়মান, আজো ঘুর্ণায়মান

 

শুধু তুমি এসে চলে গেছ কিনা জানতে পারিনি

শরীরের বস্ত্রগুলো খুলে খুলে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে

স্পর্শ দাগ কিছু রেখে গেলে কিনা খুঁজে খুঁজে দেখি

 

আয়ন অন্ধকারে খুঁজি আঙুলের ফিরে যাওয়া রেখা

নশ্বর আলেখ্য থেকে দূরে

 

আজ শীতকাল চলে গেল বলে মিশন রোডে বসে

একা একা ভ্রান্ত এই চেয়ে থাকা

 

কোকিলের কুহু ডাকে কদমের ঝরে পড়া পাতাগুলো

জড়ো করে কারা


২টি মন্তব্য: