কবিতার কালিমাটি ১২৫ |
নন্দনকাননের ভাষা
একটা
ফুল দীর্ঘদিন ও দীর্ঘ সময়
ফুটে
থাকে না,
সুবাসও ছড়ায় না!
তার
সৌন্দর্যও--
সবসময়ে
ধরে রাখতে পারে না!
নগররক্ষক
তা জানে
কোতোয়ালও জানে,
জানে মালিও!
সে-কারণে
অন্য ফুলের আগমন
অন্য ফুলের প্রস্ফুটন!
বাগানও
থাকে অবারিত--
পুরনো
ফুলকে জানায়--‘বিদায়’
নতুন ফুলকে জানায়--‘স্বাগত’।
শুধুই
খ্যাংরোমুখো নন্দনেরা--
নন্দনকাননের ভাষা বোঝে না!
আমার উঠান
আমার
উঠানে আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি
সে-কারণে
‘না’ বলতে পারছি!
এইটুকু
উঠান রয়েছে, তাই--
ঝুমকোজবা
বাঁচিয়ে রাখতে পারছি!
আমের মুকুল ধরে
উঠানের
কোণায় থাকা আম গাছে!
এইটুকু
উঠান বাঁচিয়ে রাখতে
কী
কঠিন আঘাত সহ্য করতে হলো
--সারাজীবন!
লোকসানও
গুণতে হয়েছে অনেক
মনে
তো জখমও লেগে আছে কত!
এই
উঠানে দাঁড়িয়ে আছি বলে
সূর্যের
আলো কী আপন হয়ে দেহ ছুঁয়ে থাকে,
মনও প্রফুল্ল থাকে--মরিচা পড়ে না!
এইটুকু
উঠান রয়েছে বলে
দীপিত থাকতে পারছি,
নিজেকে
নিতান্ত দীনভাবাপন্ন ভাবি না!
উত্তেজনা
ও প্রলোভনে
নিয়নবাতিতে
শোভা পাওয়া উৎসবে,
যাবো না বলে--‘না’ বলতে শিখেছি!
দরবার
দরবারে
পা রাখার পরপরই--
তার
হাঁটার শক্তি লুপ্ত হয়ে গেল
নিজের তল্লাটের কথা ভুলে গেল
কোন পরগণায় জন্ম নিয়েছিল
তা
আর মনে করতে পারল না!
দরবারে
সন্দেশ খাওয়ার পরপরই--
তার খাদ্যরুচি লুপ্ত হয়ে গেল
ছানা
ও ছানাজিলিপির পার্থক্য ভুলে গেল
মিষ্টিদই
ও টকদই তার কাছে একাকার হয়ে গেল
পদিনার
চাটনি গাপুস গপুস করে মুখে তুলল!
দরবারের
পোশাক পরার পরপরই--
কোনটা
পাঞ্জাবি কোনটা জামা বুঝতে পারে না
রাত
ও দিনের পোশাকের ভিন্নতা ঠাহর করতে পারে না
রঙ মানেই রঙিন নয়--সেই জ্ঞানও লুপ্ত হলো
বাহ্যজ্ঞান আর থাকল না!
দরবারে যাওয়ার পরপরই--
এতটা গরম ও গরিমার অধিকারী হলো
কোনটা শীতকাল ও গ্রীষ্মকাল তা বুঝতে পারল না
সূর্যোদয়
ও সূর্যাস্তের মধ্যে পার্থক্যবোধ হারিয়ে ফেলল
টর্পেডো
হওয়ার বদলে নিজেই ডুবে গেল!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন